থানায় ওসির টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনের টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঘুষ বা অনৈতিক কোনও টাকা লেনদেন করেননি বলে দাবি করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, জিডি বা অভিযোগের কাগজের সঙ্গে স্ট্যাপলার করে রাখা কিছু টাকা হাতে নিয়ে ওসি এনায়েত হোসেন এক ব্যক্তিকে উদ্দেশে করে বলেন, ‘এত অল্প টাকা দিলে মানসম্মান থাকে?’ পরে সেই টাকা তিনি ড্রয়ারে রেখে দেন। এ সময় তার সামনে আরও ২-৩ জন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা যায়। আর ওসি এনায়েত হোসেন তার থানার কক্ষে চেয়ারে বসা অবস্থায় ছিলেন।

জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনকে দেখা গেছে। তিনি ওই সময় ওসির কক্ষে ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি কোনও একটি বিষয়ে জিডি বা অভিযোগের কাগজ নিয়ে সেখানে গেলে ওই ভিডিও ধারণ করা হয়।

তবে অনৈতিক টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে ওসি এনায়েত হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ঘটনাটি প্রায় ২-৩ মাস আগের। খাগকান্দা এলাকায় কিস্তির টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। দেনাদারের কাছ থেকে সেই টাকা আদায় করার সময় কে বা কারা ভিডিও করেছে। মূলত সেই টাকা পাওনাদারের অভিযোগের ভিত্তিতে আদায় করে পরে পাওনাদারকে  দেওয়া হয়েছে। সেখানে টাকার পরিমাণ প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা ছিল।

‘ঘটনাটি অনেকদিন আগের, তাই পাওনাদার ও দেনাদারের নাম পরিচয় এই মুহূর্তে মনে নেই। তা ছাড়া অভিযোগের কপিটি কোথায় আছে তা দেখতে হবে।  তবে এই টাকা আদায় করে দেওয়ার সময়ে সেখানে বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেনে ও মাসুম শিকারীসহ আরও কয়েকজনের উপস্থিত ছিলেন। আর দেনাদার টাকার পরিমাণ কম দেওয়ায় সে সময় আমি দেনাদারকে উদ্দেশ করে বলেছি, “এত অল্প টাকায় মানসম্মান থাকে না।” এ ছাড়া অন্য কিছু নয়। কে বা কারা এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে রূপ দেওয়ার জন্য ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি কারও কাছ থেকে অনৈতিক কোনও টাকা বা ঘুষ নিইনি। এ ছাড়া থানায় জিডি করতে কোনও টাকা নেওয়া হয় না। প্রয়োজনে আপনারা থানায় গোপনে এসে যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারেন।’

এ বিষয়ে জানতে আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মো. মেহেদী ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভিডিটি দেখেছি। এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

একজন পুলিশ কর্মকর্তা থানার ভেতরে আর্থিক লেনদেন করতে পারেন কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনও পুলিশ কর্মকর্তার থানায় টাকা লেনদেন করার দরকার পড়ে না। কারণ থানায় সব সার্ভিস ফ্রি। তবে তবে এই টাকা কিসের তা খতিয়ে দেখা হবে।’