বান্দরবানে পাহাড়িদের সাংগ্রাই উৎসব জলকেলিতে মাতোয়ারা পাহাড়ি পল্লিগুলো। উৎসবের আমেজে রঙ লেগেছে পাহাড়ে। পাহাড়ি পল্লিগুলোতে এখন সাজ সাজ রব। মারমা সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব সাংগ্রাই। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে জলকেলি।
সাংগ্রাই উৎসবে বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায়ের আনাচে-কানাচে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা মৈত্রী পানি বর্ষণ করে জলকেলিতে মেতে ওঠেন। সাংগ্রাই উৎসবে পানি খেলার মাধ্যমে পুরনো বছরের সব দুঃখ-কষ্ট, গ্লানি ধুয়ে-মুছে নতুন বছরকে বরণ করে তারা। তবে এটি এখন শুধু মারমাদেরই না, সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকাল থেকে পুরো জেলা শহরে শুরু হয়েছে পানি খেলা। শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী, এমনকি বয়স্করাও একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিচ্ছেন। এ উৎসবে যোগ দিয়েছেন পর্যটকরাও। উৎসবের রাতে পাড়া-মহল্লায় মারমা তরুণ-তরুণীরা রাত জেগে পিঠা তৈরি করেন। আনন্দ-উদ্দীপনা আর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে বর্ণিল হয়ে উঠেছে বান্দরবান শহর।
বুধবার বিকালে বান্দরবান শহরের রাজার মাঠে জলকেলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চলবে আজ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারও।
এ সময় জলকেলি উৎসবে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পানি খেলায় মেতে ওঠেন মারমা তরুণ-তরুণীরা। পাহাড়ি নারী-পুরুষের পাশাপাশি পর্যটকরাও জলকেলি উৎসবে যোগ দেন। পানি খেলার পাশাপাশি আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে নেচে-গেয়ে মাতিয়েছেন পাহাড়ি শিল্পীরা।
মারমা তরুণী চিং মে প্রু বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর এ সাংগ্রাই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি। এ দিনে প্রথম দিন আমরা বিহারে ছোয়াইং (খাবার) দিই। এ ছাড়া বুদ্ধমূর্তি স্নান, নৌকাবাইচ, পানি খেলাসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠান করি। আমরা পানি ছিটিয়ে একে অপরের প্রতি সকল দুঃখ, গ্লানি মুছে দিই।’
উথোয়াইচিং নামে আরেকজন বলেন, ‘আমরা সাংগ্রাইয়ে অনেক আনন্দ করি। মৈত্রী পানি বর্ষণ হচ্ছে এ অনুষ্ঠানের মূল আর্কষণ। এ ছাড়া পিঠা উৎসব, বয়স্কপূজা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এ সাংগ্রাইয়ে।’
আগামী ১৮ এপ্রিল বিকালে স্থানীয় রাজার মাঠে জলকেলি উৎসব এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সপ্তাহব্যাপী পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব এ সাংগ্রাই।