বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে বর্ষ বরণ ও বিদায়। সোমবার (১৪ এপ্রিল) নগরীর সিআরবির শিরীষতলা, জেলা শিল্প কলা একাডেমিসহ আরও কয়েকটি স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যাগে চলছে নানা অনুষ্ঠানমালা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। তবে নগরীর ডিসি হিলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও আগের দিন রবিবার রাতে অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুরের কারণে সেখানে অনুষ্ঠানমালা বাতিল করেছে আয়োজকরা।
নগরীর সিআরবির শিরীষ তলায় বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম নববর্ষ উদযাপন পরিষদ। আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক তাহের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে সিআরবিতে অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এখানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আমরা ওই সময়ের মধ্যে শেষ করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ৫৬টি সংগঠন গান, নৃত্য, আবৃত্তিসহ নানা অনুষ্ঠানমালায় অংশগ্রহণ করছে। এখন পর্যন্ত পরিবেশ ভালো। কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আশা করছি, কোনও ধরনের সমস্যা ছাড়াই সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান শেষ করতে পারবো।’
সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যাগে অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে আয়োজিত নববর্ষ বরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেন মেয়র ডা. শাহাদাত। শোভাযাত্রায় অংশ নেন সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। শোভাযাত্রাটি চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রাম ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভাঙচুর করে একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় আয়োজনকারী সংগঠন ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’-এর বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের সমন্বয়কারী সুচরিত দাশ খোকন বলেন, ‘রবিবার অনুষ্ঠান মঞ্চে অতর্কিত হামলার পর আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা আয়োজকরা মিলে রবিবার রাতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আজ সোমবার পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান না করার। অনুষ্ঠান মঞ্চে অতর্কিত হামলা এবং প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি আমরা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।’
এর আগে রবিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ৩০ থেকে ৪০ জন মিছিল নিয়ে এসে ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। মঞ্চসজ্জায় ব্যবহৃত কাঠের স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, 'পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবসহ অন্যান্য সংস্থাও নিরাপত্তায় কাজ করছে।'