নাটোরে আদালতের মালখানা থেকে তালা ও জানালা ভেঙে ৬১ লাখ ৩৯ হাজার নগদ টাকাসহ ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় বরখাস্ত এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এর আগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের শনিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে নাটোর চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মো. আল আমীন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতার পাঁচ জন হলেন– অন্য একটি বিভাগীয় মামলায় এই ঘটনার আগে থেকেই বরখাস্ত পুলিশ সদস্য রাশেদুল নবী, ছাব্বির হোসেন, আকাশ, বাতাশ ও দুদু মিয়া। তারা সবাই নাটোর সদর উপজেলার বাসিন্দা।
জানা গেছে, এর আগে বৃহস্পতিবার রাতের কোনও এক সময় চুরির ঘটনা ঘটলেও শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা দায়ের করেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, এই চুরির ঘটনাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। বরখাস্ত এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় রাতে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। টাকা ও মালামাল উদ্ধারের পাশাপাশি চোরচক্রকে ধরতে পুলিশ মাঠে আছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত পুলিশের এক সদস্য মালখানার জানালার গ্রিল ভাঙা দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে আদালত পরিদর্শককে খবর দিলে তিনি এসে মালখানা খুলে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন। খবর পেয়ে নাটোরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মো. নাসিরুল হক ও পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
চুরি যাওয়া টাকার মধ্যে সম্প্রতি জেলার সিংড়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলীর হেফাজত থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৭ লাখ টাকাও ছিল। পুলিশের ধারণা, ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চোর চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ মামলার বাদী পরিদর্শক মোস্তফা কামাল জানান, মালখানা পাহারায় প্রহরী ছিলেন। তা ছাড়া মালখানা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কিন্তু চোরচক্র পেছনের জানালার গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে এবং লকারের তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করেছে। একই সঙ্গে তারা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক বক্স খুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কর্তব্যরত ব্যক্তিদের অবহেলা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অবহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান জানান, শুক্রবার দুপুরের দিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরপরই মালখানার মালামাল রেজিস্টার দেখে মেলানোর কাজ চলছিল। সন্ধ্যা নাগাদ একটা হিসাব পাওয়া গেছে। তাতে নগদ ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ব্যাপারে আদালত পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ছাব্বির হোসেন, আকাশ, রাশেদুল নবী, বাতাশ, দুদু মিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।