তিন জেলায় পানিতে ডুবে ৬ জনের মৃত্যু

কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ ও খাগড়াছড়িতে পানিতে ডুবে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে চার শিশু ও দুই কিশোরী রয়েছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দিনের বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় এলাকাগুলোতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

কুমিল্লা

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের বরলা গ্রামের হাশেম মাস্টার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুই শিশু হলো উপজেলার বরলা গ্রামের মাস্টার বাড়ির মাইন উদ্দিনের ছেলে আবদুল (৩) ও মহিন উদ্দিনের ছেলে মাহাদি (৪)। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই শিশুর পরিবারের সদস্যরা রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ওই সময় শিশু দুটি বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। ধারণা করা হচ্ছে, খেলার একপর্যায়ে দুজন পাশের পুকুরে পড়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর দুজনের দেহ পুকুরের পানিতে ভেসে ওঠে। পরিবারের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে নাথের পেটুয়া স্টেশন বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে পানিতে ডুবে ওমর ফারুক (২) ও নুসরাত খানম (৮) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে কোটালীপাড়া উপজেলার চৌরখুলী ও হিজলবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু ওমর ফারুক উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামের জসিম শেখের ছেলে ও নুসরাত খানম একই উপজেলার  হিজলবাড়ি গ্রামের মশিউর হাজরার মেয়ে।

নিহত ওমর ফারুকের দাদা জেহারুল শেখ জানান, আমার নাতি ওমর ফারুককে বাড়ির উঠানে বসিয়ে রেখে ওর মা পুকুর ঘাটে জামাকাপড় ধুতে যায়। কিছু সময় পরে আমরা ওমর ফারুকে উঠানে দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গা খোঁজাখুজি করি। এ সময় পরিবারের লোকজন বাড়ির পশ্চিম পাশের পুকুরের পানিতে  ওমর ফারুকে ভাসতে দেখতে পায়। পরিবার ও স্থানীয়রা তাকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওমর ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে নুসরাত খানমের বাবা মশিউর হাজরা বলেন, বাড়ির পাশে ভেকু মেশিন দিয়ে মাছের ঘের কাটছিল। ভেকু মেশিন দেখতে আশপাশের লোকজনের সঙ্গে আমার মেয়ে দেখতে যায়। ভেকু মেশিন দেখে একা একা বাড়ি ফিরছিল। পাশের বাড়ির  বিজয় মাস্টারের মাছের ঘেরে পৌঁছালে পা পিছলে মাছের ঘেরে পড়ে যায়। পাশের বাড়ির শিশু জোনায়েদ নুসরাতকে পানিতে পড়তে দেখতে পায় এবং আমাদের বাড়ি এসে খবর দেয়। আমরা দৌড়ে গিয়ে মাছের ঘের থেকে নুসরাতকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুসরাতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরিবার দুটির পক্ষ থেকে কারও প্রতি কোনও অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।

খাগড়াছড়ি

জেলার সদর উপজেলার ভাইবোন ছড়া এলাকায় চেঙ্গী নদীতে ডুবে মারা গেছে দু’জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা।

পানিতে ডুবে মারা যাওয়া একজন রিয়া চাকমা (১৭ ), আরেকজন পিয়াসি (বেটি) চাকমা (১৪) । পিয়াসি চাকমা একই এলাকার বিদেশি চাকমা এবং রিয়া চাকমা একই এলাকার রূপায়ণ চাকমার মেয়ে।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, শুক্রবার দুপুরে চেঙ্গী নদীতে পাঁচ কিশোরী শামুক খুঁজতে যায়। এ সময় শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে রিয়া চাকমা চেঙ্গী নদীতে পড়ে যায়। এ সময় তাকে উদ্ধার করতে পিয়াসি চাকমাও নদীতে ঝাঁপ দেয়। নদীতে পানির গভীরতা বেশি থাকায় সেও ডুবে যায়। এ সময় সঙ্গে থাকা অন্যান্যরা স্থানীয়দের খবর দিলে নদীতে জাল ফেলে এক ঘণ্টা পর দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।