নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের নিয়ে যেন এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে হাওর এলাকার মানুষের মাঝে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বোরো ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, হাওরাঞ্চলে এক হাজারের মতো হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে বোরো ধান কাটা চলছে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কৃষকসহ কয়েক সহস্রাধিক শ্রমিক। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই হাওর এলাকার শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে।
কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক কোনও দুর্যোগ দেখা না দিলে এবার বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে পারবেন তারা।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলার ১০টি উপজেলায় এ বছর এক লাখ ৮৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলার হাওর উপজেলা মদন, খালিয়াজুরী ও মোহনগঞ্জে বোরো আবাদ হয়েছে ৫৪ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে।
জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, ‘গত চার পাঁচ দিন ধরে আমরা হাওরের ধান কাটা শুরু করেছি। এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। হারভেস্টার মেশিন দিয়ে খুব সহজেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছি। ধান ঘরে তুলতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের এখানে সবচেয়ে বড় হাওর ডিঙ্গাপোতা। সেটিসহ সবকটি হাওরেই ধান কাটা চলছে। ফলন ভালো হলেও এবার উৎপাদন ও ধানকাটা শ্রমিকদের খরচ একটু বেশি। তবুও আলহামদুলিল্লাহ। ভালোয় ভালোয় সব ধান ঘরে তুলতে পারলেই আমরা সন্তুষ্ট।’
জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামের কৃষক সাইকুল মিয়া বলেন, ‘ধানের ফলন এ বছর ভালোই হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক কোনও দুর্যোগ যেমন ঝড়-তুফান, শিলাবৃষ্টি এসব না হলে আশা করি আমরা লাভবান হবো।’
নেত্রকোনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, ‘দ্রুতগতিতে হাওর এলাকার ধান কাটা চলছে। জেলার প্রায় সাতশ মতো হারভেস্টার মেশিন এখন ধান কাটায় ব্যস্ত। এ ছাড়া জেলার বাইরে থেকে আরও মেশিন আনা হয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই হাওরাঞ্চলের শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে।’