মীরসরাইয়ে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলা, মীরসরাই পৌরসভা শাখা ও বারইয়ারহাট পৌরসভা শাখা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে এই কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে ঝাঁড়ুমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের সমর্থিতরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে কমিটি বাতিলের দাবিতে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। পদবঞ্চিত বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা দ্রুত মীরসরাই বিএনপির কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবি জানান।

এর আগে, মীরসরাই উপজেলা বিএনপিতে আব্দুল আউয়াল চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও আজিজুর রহমান চৌধুরীকে সদস্যসচিব করে ৮৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন– সালাহ উদ্দিন সেলিম, নুরুল আবছার চেয়ারম্যান, মাঈন উদ্দিন মাহমুদ, মো. আলমগীর, ফখরুল ইসলাম, সরোয়ার উদ্দিন সেলিম, জসিম উদ্দিন প্রমুখ। বারইয়ারহাট পৌরসভা কমিটিতে মঈন উদ্দিন লিটনকে আহ্বায়ক ও জসিম উদ্দিন কমিশনারকে সদস্যসচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট এবং মীরসরাই পৌরসভা কমিটিতে জামশেদ আলম কমিশনারকে আহ্বায়ক ও কামরুল হাসান লিটনকে সদস্যসচিব করে ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে উপজেলার সব ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন এবং পৌরসভার কমিটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিটি ইউনিটে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিটির ঘোষণা হওয়ার পর সোমবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপি, যুবদল ছাত্রদলের ৯ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভা, বামনসুন্দর বাজার, ঝুলনপোল বাজার, বড়তাকিয়া বাজার, আবুতোরাব বাজার, মীরসরাই পৌরসভায় বিক্ষোভ মিছিল ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। মীরসরাই পৌরসভা বিএনপির নবনির্বাচিত সদস্য সচিব কামরুল হাসান লিটনের কার্যালয়ে হামলায় আহত হয়েছেন ৪ জন। আহতরা হলেন, রাশেদ, সোহাগ, শাকিল আহদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কাটাছরা ইউনিয়নে হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শহীদ, যুবদল নেতা কামরুলসহ ৫ জন আহত হয়েছেন।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য শাহীনুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর পকেট কমিটি ঘোষণা করেছেন। এই কমিটির বেশির ভাগ লোক এলাকায় থাকেন না। ঢাকা, চট্টগ্রাম শহরে থাকেন। অবিলম্বে এই অবৈধ পকেট কমিটি বাতিল করে নতুন করে কমিটি গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

মীরসরাই উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আউয়াল চৌধুরী বলেন, 'আমি ছাত্রজীবন থেকে জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিতে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। দীর্ঘদিন লড়াই-সংগ্রামে দলের দুঃসময়ে নিবিড়ভাবে বিএনপির রাজনীতির পাশে থেকে জনগণের কল্যাণে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে থেকে কাজ করেছি। দল আমাকে যোগ্য মনে করে এত বড় দায়িত্ব দিয়েছে। আমি যথাযথভাবে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের ফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি।

মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘হামলার বিষয়ে আমি জেনেছি। পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মঙ্গলবার সকালে মীরসরাই সদরে মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রায় ১০ মিনিটের মতো সড়কে অবস্থানে ছিল। এতে তেমন যানজট সৃষ্টি হয়নি।’