রাজশাহী চিনিকলে চিনির দাম বেশি চাওয়ার প্রতিবাদ করায় রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ওই ব্যক্তির লোকজন চিনিকলের প্রশাসনিক ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় মারফুল ইসলাম দুলাল নামে এক ওজনদারকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
আহত রফিকুল ও মারফুল চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রফিকুলের অভিযোগ, রেশন বিতরণের দায়িত্বে থাকা করনিক শাহীনুর রহমান ও ওজনদার মারফুল ইসলাম দুলাল তাকে মারধর করেছেন। তাকে রক্তাক্ত দেখে তার লোকজন হামলা চালান। রফিকুল দাবি করেন, এক বস্তা (৫০ কেজি) চিনির দাম ৬ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু তিনি চিনি নিতে গেলে সাড়ে ৬ হাজার টাকা চাওয়া হয়। তিনি এর প্রতিবাদ করলে শাহীনুর ও মারফুল বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। এতে তার চোখের নিচে জখম হয়।
মার খেয়ে রফিকুল চিনিকল থেকে বের হয়ে বাসায় চলে যান। এ সময় তাকে রক্তাক্ত দেখে ‘এলাকার ছেলেরা’ চিনিকলে হামলা চালায়। রফিকুল দাবি করেন, তিনি ওই হামলা করেননি। আহত হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তিনি রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলেও জানান।
তবে রেশন করনিক শাহীনুর রহমান বলছেন, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রফিকুল ইসলাম রেশনের এক মণ চিনি নিতে আসেন। এ সময় তার কাছে চিনির দাম ছাড়াও বস্তার দাম বাবদ আরও ২০ টাকা চাইলে তর্ক-বিতর্ক শুরু করেন। এর জেরে রফিকুল ফোন করে তার নিজ এলাকা শ্যামপুরের লোকজনকে ডাকেন। কিছুক্ষণ পর কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত এসে প্রশাসন ভবনে হামলা করে। এ সময় রেশম করনিক শাহীনুর ও ওজনদার মারফুলকে মারপিট করা হয়। একপর্যায়ে শাহিনুর সেখান থেকে পালিয়ে গেলেও দুলালকে রক্তাক্ত করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যদেরও ধাক্কা দেওয়া হয়।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ন কবীর বলেন, ‘হামলাকারীরা তিনতলা প্রশাসন ভবনের প্রতিটি ফ্লোরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কক্ষ ভাঙচুর করেছে। চেয়ার, টেবিল ও টেবিলের কাচ ভাঙা হয়েছে। সাতটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার ভেঙে ফেলা হয়েছে। চিনি বিক্রির কিছু টাকাও লুট হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা দ্রুতই থানায় অভিযোগ দায়ের করবো।’
তিনি বলেন, ‘কেন এমন ঘটনা ঘটেছে সেটা এখনই বলতে পারছি না। পুলিশ এসেছে, তদন্ত করছে।’
রাজশাহীর কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, ‘আমরা এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। হামলার খবর শুনেই আমরা এসেছি। প্রাথমিক তদন্ত চলছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’