রুয়েট শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর একটি ছাত্রাবাসের নবম তলার একটি কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

মৃত শিক্ষার্থীর নাম মেহেদী হাসান মুহিব। তিনি রুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি রংপুরে।

রাফি আল হাসান নামের রুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মুহিব ভাই ও আমি এলাকায় একই স্কুলে পড়াশোনা করতাম। তিনি আমার স্কুলের বড় ভাই। আমাদের জেলা সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। ভাই খুব উৎফুল্ল মনের মানুষ, কিন্তু কেন আত্মহত্যা করলেন আমরা জানি না। বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। সেখানে রুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ফরেনসিক বিভাগের লোকজনও উপস্থিত ছিল।’

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। আমরা মরদেহটি উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রেখেছি। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।’

রুয়েটের ছাত্র উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, ‘দুই সিটের একটি রুমে থাকতেন মেহেদী। তার রুমমেট নেই। রুমে একাই ছিলেন। ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীরা দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে লাশ উদ্ধার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে মেহেদীর মা তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। এভাবে সারাদিন গড়িয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তিনি ছাত্রাবাসের অন্য এক ছাত্রকে ফোন করে মেহেদী আছেন কিনা তা দেখতে বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা দেখেন, মেহেদীর রুম ভেতর থেকে লাগানো। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেহেদীর লাশ দেখেন।’

ছাত্র উপদেষ্টা জানান, মেহেদীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ করে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু এক বিষয়ে ফেল থাকার কারণে মেহেদী যেতে পারেননি। এটা নিয়ে তার ডিপ্রেশন ছিল। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এই ডিপ্রেশনের কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন জানিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আসলে চিন্তার বিষয়। কয়েকজন ছাত্রের আত্মহত্যার পর আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছি। সপ্তাহে তিন দিন তিনি রুয়েটে আসেন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া শিক্ষার্থীরা তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।’