গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ না বলায় অসদাচরণের অভিযোগ

‘স্যার’ না বলে ‘ভাই’ সম্বোধন করায় গ্রাহকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা শাখার গ্রামীণ ব্যাংকের সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বুধবার দুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা শাখায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী গ্রাহক উপজেলার ঝিটকা এলাকার বাসিন্দা সুব্রত সন্ন্যাসী। তার ধারণ করা এ ঘটনায় ভিডিওতে দেখা যায়, আলাপচারিতার একপর্যায়ে সুব্রত সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদকে বলছেন, ‘সম্মান দিয়ে ভাই বলা কি অপরাধ? আপনাদের ভাই বলা যাবে না? স্যারই বলতে হবে?’ জবাবে আবুল কালাম আজাদ বলছেন, ‘ভাই বলা যাবে না, স্যার বলবেন। সেকেন্ড ম্যানেজার আরও বলেন, ‘আপনি ভদ্রতা দেখান। গ্রামীণ ব্যাংকের সবাইকেই স্যার বলতে হবে।’ ভুক্তভোগী প্রশ্ন করেন ‘কেন?’ সেকেন্ড ম্যানেজার বলেন, ‘বলতে হবে। এটাই নিয়ম। এটা সবাই বলে।’ পরে গ্রাহক পাল্টা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আপনি এতো তর্ক করেন কেন। আপনার কোনও সম্পর্কের ভাই উনি (ম্যানেজার)।’ পরে ভুক্তভোগীর দিকে আবুল কালাম আঙুল তুলে কথাবার্তা সাবধানে বলার হুমকি দেন। পরে গ্রাহক আঙুল নামাতে বললে আজাদ তাকে মারতে উদ্যত হয়ে ধাক্কা দিয়ে ব্যাংক থেকে বের করে দেন এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সুব্রত বলেন, ‘বুধবার দুপুরে টাকা তুলতে একটা চেক নিয়ে ব্যাংকে যাই। তারা আমাকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রেখে বলেন আগামীকাল আসার জন্য। তখন আমি, ম্যানেজারকে বলি, কালকে কখন আসবো? এটা বলার পরেই সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আমাকে ভাই বাদ দিয়ে স্যার বলে সম্বোধন করতে বলেন। তখন আমি তাকে কয়েকটা প্রশ্ন করলে তিনি আমাকে মারতে উদ্যত হয় এবং ব্যাংক থেকে বের করে দেন। আমার মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর আমি পুরো ঘটনাটি ম্যানেজারকে জানালেও তিনি ওই সেকেন্ড ম্যানেজরের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি।’

জানতে চাইলে সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘উনি স্যার বললে অসুবিধাটা কোথায়? এইটুকু কথা সহজভাবে নিলেই হয়। এই ছোট বিষয় নিয়ে যদি কেউ তিলকে তাল করে তাহলে আমার কিছু করার নেই।’

ওই শাখার ম্যানেজার অদ্বৈত কুমার মৃধা বলেন, ‘ভাই বলার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রত্যেকটা অফিসের একটা প্রটোকল অনুযায়ী সবাই সেটা মেইনটেইন করে। আর তাদের দুজনের মধ্যে আগের কোনও ঘটনার জেরে হয়তো এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। এটি নিয়ে আমি সেকেন্ড ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তিনি অনুতপ্ত।’