খুলনায় ৫৭০ টাকার কৃষিপণ্য পাওয়া যাচ্ছে ৩২০ টাকায়

সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় ধাপে খুলনায় শুরু হয়েছে ‘খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস)’ নামে কৃষি বিপণন বিভাগের উদ্যোগে সাশ্রয়ী মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি কর্মসূচি। সোমবার (২৮ অক্টোবর) থেকে এই কর্মসূচির আওতায় ৫৭০ টাকা সমমূল্যের ৫টি পণ্যের প্যাকেজ ৩২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে খুলনা মহানগরীর পাঁচ পয়েন্টে।

নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের মধ্যে সরকারের এই কর্মসূচি চালু হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর এবার খুলনায় শুরু হলো এই কার্যক্রম। 

ওএমএসের খুলনা মহানগরীর বিক্রয় কেন্দ্রগুলো হলো– বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, শিববাড়ি মোড়, খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের সামনে এবং খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন মোড়।

খুলনায় ওএমএস কার্যক্রমে ৩ কেজি আলু, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ ডজন ডিম, ১ কেজি ৩০০ গ্রাম কাঁচা পেঁপে ও ১ কেজি পটল এই ৫টি পণ্যের একটি প্যাকেজ বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকায়, পেঁয়াজ ৭০ টাকায়, কাঁচা পেঁপে ১৫ টাকায়, পটল ৩০ টাকায় এবং ডিম ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই হিসাব অনুযায়ী প্যাকেজের মোট মূল্য রাখা হচ্ছে ৩২০ টাকা।

একইদিনে এই ৫টি পণ্যের বাজার মূল্য ছিল– প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ১১০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা এবং ডিম ডজন প্রতি ১৬৫-১৭০ টাকা। এই হিসাবে বিক্রি করা প্যাকেজের বাজার মূল্য হয়  ৫৭০ টাকা।

প্যাকেজ পণ্য কিনতে আসা গোলাম রসুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৩২০ টাকায় যে পণ্য কিনলাম, বাজারে তার দাম আসতো ৬০০ টাকার ওপরে। এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে পেয়ে ভালো লাগছে। আলু বাজারে ৬০ টাকা কেজি, এখানে ৩০ টাকা। ডিম ১৬৫-১৭০ টাকা ডজন বাজারে, এখানে ১১০ টাকা। এতেই বুঝতে পারবেন কতটা পার্থক্য আছে দামে।’

আরেকজন ক্রেতা নাসিমা বেগম বলেন, ‘দোকানের তুলনায় এখানে দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় দরিদ্র মানুষদের জন্য এটা বড় প্রাপ্তি। দাম বেশি হওয়ায় দোকান থেকে স্বল্প পরিমাণে কিনতে হতো, আর দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় একটি প্যাকেজ নিতে পারলাম।’

ট্রাক সেলের কর্মী রেজোয়ান শেখ জানান, একটি ট্রাকে ২০০ জনকে দেওয়ার মতো পণ্য আছে। প্রথম দিনের বিক্রির পর ক্রেতাদের আগ্রহ ও চাহিদার বিষয়ে জানা যাবে। প্রয়োজনে সামনের দিনে ট্রাক সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে।

খুলনা কৃষি বিপণন অফিসের কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, ট্রাকে প্রতিটি পণ্য এক হাজার ২৪০ কেজি এবং ২ হাজার ৪০০টি ডিম রয়েছে। প্রতি ট্রাক থেকে ২০০টি করে প্যাকেজ তৈরি হবে।

খুলনা কৃষি বিপণন বিভাগের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা (ইনচার্জ) আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, ‘আপাতত বিভাগীয় শহরে পাঁচটি পয়েন্টে এ কার্যক্রম চালু হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে চালুর চিন্তা করা হয়নি এখনও। পয়েন্টগুলোতে তিন জন কর্মচারী, দুজন আনসার সদস্য ও দুজন শ্রমিক নিয়ে আমাদের ট্রাক সেলে এ কার্যক্রম চলছে।’

কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম জানান, টানা তিন বারের বন্যার কারণে পণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্তরা গভীর সংকটে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ভর্তূকি মূল্যে আমরা পণ্য দিচ্ছি।