কলেজশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা: দুই জনের মৃত্যুদণ্ড

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে এক কলেজশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মামলায় রনি মহন্ত (৩২) ও কামিনী জাহিদ (৩৫) নামে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আব্দুল মোক্তাদির এ রায় দেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিতি ছিল।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফিরোজা চৌধুরী।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো– পাঁচবিবি উপজেলার মাঝিনা গ্রামের শঙ্কর মহন্তের ছেলে রনি মহন্ত (৩২) এবং খোরশেদ আলীর ছেলে কামিনী জাহিদ (৩৫)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৬ মে রাতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাসিন্দা ও জয়পুরহাট সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নিজ বাড়িতে ধর্ষণের পর হত্যা করে আসামিরা। এ সময় ভুক্তোভোগীর পরিবারের লোকজন বাড়িতে ছিলেন না। ওই ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় মামলা করেন। পরদিন ৭ মে রাতেই পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে। ৮ মে রাতে গ্রেফতারকৃতরা জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। রনি মহন্ত তার সহকর্মী জাহিদকে নিয়ে ৬ মে রাত ১টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাড়ির দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর সুযোগ বুঝে রাত ২টার দিকে ঘরে প্রবেশ করে। প্রথমে রনি মহন্ত ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। ভিকটিম চিৎকার করে বাধা দেন। তখন আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে। এক পর্যায়ে ভিকটিম মারা গেলে কামিনী জাহিদ মরদেহে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতার দুজন আদালতে জবানবন্দিতে লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে জানায়, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি মৃত্যুর পরও রেহাই পাননি তাদের হাত থেকে।

পরবর্তী সময়ে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) হাবিবুর রহমান ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে সোমবার দুপুরে আদালতের বিচারক এ রায় দেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের পিপি ফিরোজা চৌধুরী। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।