টানা বর্ষণে নোয়াখালীতে বন্যা পরবর্তী জলাবদ্ধতা আবারও রূপ নিচ্ছে বন্যায়

দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরেই নোয়াখালীর পৌর এলাকাসহ জেলার আট উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ বৃষ্টি বন্ধ থাকায় অনেক জায়গা থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছিল। তবে চলমান নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বন্যা পরবর্তী জলাবদ্ধতা আবারও বন্যায় রূপ নিচ্ছে। অধিকাংশ সড়ক ও বাড়িঘর আবারও ডুবতে শুরু করেছে। আতঙ্ক বাড়ছে পানিবন্দি ও বানভাসিদের মাঝে।

সরেজমিন শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিম্নাঞ্চলগুলো ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে। ডুবে আছে বসতঘর ও সড়ক। বসতঘরে পানি ওঠায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগে থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনেরও বাড়ি ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মাইজদীতে ১২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

অধিকাংশ সড়ক ও বাড়িঘর আবারও ডুবতে শুরু করেছেএদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে নদী ও সাগর উত্তাল রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর ও মেঘনা নদীর মোহনায় ১০টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবেছে। এখন পর্যন্ত এসব ট্রলারের ১১২ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।

হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নে গাছচাপায় সিএনজি অটোরিকশাতে থাকা একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এখনও তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি প্রশাসন।

জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ায় হাতিয়ার প্রায় ১০টি ট্রলার ডুবে ৩০ জনের অধিক জেলে নিখোঁজ আছেন। বর্তমানে দ্বীপ হাতিয়ার সঙ্গে আমাদের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কেউ হাতিয়ায় আসতে পারছে না, আবার যেতেও পারছে না।’

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। হাতিয়ায় গাছ চাপা পড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ট্রলারডুবিতে অনেক জেলে নিখোঁজ থাকার খবর পেয়েছি।’