বিলম্বিত হচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার ‘ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার’ প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহ। গত আগস্ট মাসে এটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। কবে চালু হবে তা বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রকল্প থেকে দৈনিক ৬ লাখ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা যাবে। এখান থেকে জেলার বোয়ালখালী, কর্ণফুলী, পটিয়া উপজেলা এবং কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চল, সিইউএফএল এবং কাফকো শিল্পাঞ্চলে পানি সরবরাহের কথা রয়েছে। এক হাজার ৩৬ কোটি টাকায় শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হয়েছে এক হাজার ৯৯৫ কোটি ১৫ লাখ টাকায়। ওয়াসার অন্যান্য প্রকল্পের মতো এ প্রকল্পেও ব্যয় বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে ছোট-বড় ১৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানে বাণিজ্যিক সংযোগ দেওয়া হবে। এসব প্রতিষ্ঠানে দৈনিক ৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহের টার্গেট আছে। এ ছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের মাঝে দেওয়া হবে ২ কোটি লিটার পানি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহের জন্য পটিয়া বাইপাস এলাকায় ৫ একর জায়গায় এবং আনোয়ারার দৌলতপুর মৌজায় ২ দশমিক ৯৪ একর জায়গায় দুটি জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনে শেষ হয়েছে ১১৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানোর কাজও।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘প্রকল্পের অধীনে পানি সরবরাহের জন্য কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন, সিইউএফএল, কাফকোসহ অন্যান্য শিল্পাঞ্চল এবং ৯০০ জন আবাসিকের গ্রাহক সংযোগ পেতে আবেদন করেছিলেন। ইতোমধ্যে আমরা ৫০০ গ্রাহককে সংযোগ পৌঁছে দিয়েছি। বাকি গ্রাহকের সংযোগ দেওয়ার কাজ চলমান আছে। আমরা চেষ্টা করছি, প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করে আগামী মাসের মধ্যে পানি সরবরাহ শুরু করতে।’
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার প্রকল্পটি। তখন প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে প্রকল্পের শুরুতে ভূমি নিয়ে জটিলতায় পড়তে হয় ওয়াসাকে। এজন্য তিন বছর আটকে পড়ে প্রকল্পটি। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয় নির্মাণকাজ। ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রথম সংশোধিত আকারে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় ও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে এক হাজার ৯৯৫ কোটি ১৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। প্রকল্পের ৮২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক। বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে এক হাজার ১৫০ কোটি ৬৫ লাখ এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা নিজস্ব তহবিল থেকে দিচ্ছে ২০ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ওয়াসার প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে শেষ করা হয় না। নানা বাহনায় প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হয়। প্রত্যেক প্রকল্পে সময় বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যয়ও বাড়ানো হয়েছে। এতে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে লাভবান হয়েছেন ওয়াসার কর্মকর্তারাও।’