শেরপুরে ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরে ওই উপজেলার রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, ঝিনাইগাতীসহ কয়েক স্থানে বাঁধ ভেঙে কমপক্ষে ৩০টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ঢলের পানি প্রবেশ করেছে উপজেলা শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন অফিস ও বাড়িঘরে। বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে চারটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর খালভাঙ্গা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। অপরদিকে শ্রীবরদী উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতেও ব্যাপকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ঝিনাইগাতী শহরসহ ভাটি এলাকার কমপক্ষে ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে ডুবে গেছে অনেক পুকুর, বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও বীজতলা।

ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘মহারশি নদীর ঝিনাইগাতী ব্রিজপাড় থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা অবৈধভাবে দখল করে বসতি স্থাপন করায় নদীর নাব্য কমে গেছে। এ ছাড়া নদীটি খনন করে নাব্য ফিরিয়ে না আনায় প্রতি বছর সদর বাজারসহ পুরো এলাকা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এলাকার সচেতন মহলের দাবি অনুযায়ী আমরা নদীর বুকে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনাসহ স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবো।’

এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল কবীর রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক, উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাদৎ হোসেন, ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল কবীর রাসেল জানান, মহারশি নদীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। স্ব-স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও ঢেউটিন প্রদান করা হবে।