‘হামার চরের মানুষের প্রতি প্রার্থীরঘরে (প্রার্থীদের) গুরুত্ব নাই। ওমরা (তারা) হামাক যেমন গুরুত্ব কম দেয়, হামার চরের মানুষও ভোটটা গুরুত্ব কম দেয়।’ কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম প্রশ্নে এভাবেই জবাব দেন প্রবীণ ভোটার হাশেম আলী (৭০)।
হাশেম আলী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার দ্বীপচর ইউনিয়ন নারায়ণপুরের মিরকামারী গ্রামের বাসিন্দা। নিজে ভোট দিলেও কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ হিসেবে ভোটারদের প্রতি প্রার্থীদের অবহেলাকেই দায়ী করেন এই প্রবীণ।
বুধবার সকাল থেকেই নারায়ণপুরের কেন্দ্রগুলোর কোনোটিতেই ভোটারদের লাইন চোখে পড়েনি। থেমে থেমে ভোটাররা আসলেও কেন্দ্রগুলোতে দুপুর পর্যন্ত ভোট প্রদানের হার ছিল নগণ্য।
ইউনিয়নের মিরকামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার এক হাজার ৬৪৭। দুপুর ২টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩৫০টি। যা মোট ভোটের ২১ দশমিক ২৪ ভাগ।
একই ইউনিয়নের পদ্মারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোটার উপস্থিতি কম। লাইন ছাড়াই কিছু সময় পরপর ভোটাররা এসে ভোট দিচ্ছিলেন। ওই কেন্দ্রে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩৪৮। সেখানে মোট ভোটার ৩ হাজার ৭২।
এলাকাবাসী জানায়, এলাকার অনেক বাসিন্দা কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে জেলার বাইরে অবস্থান করছেন। যারা আছেন তারাও কৃষিক্ষেতে কাজে ব্যস্ত। নারীরাও সাংসারিক কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটে মানুষের আগ্রহ কম।
ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ মিলে কৃষিজমিতে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে দুপুরের পর কেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা বাড়তে শুরু করে।
নারায়ণপুরের আরেক বাসিন্দা স্নাতক (সম্মান) শিক্ষার্থী মিজানুর বলেন, ‘জনগণ ভোট দেয় একজনকে, ডিক্লেয়ার হন আরেক জন। ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়। জনগণ এই গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, এ জন্য ভোট দিতে চায় না।’
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ জানান, উপজেলায় সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। কোথাও কোনও অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি।