ভিজিএফের চাল না পাওয়া উপকারভোগীদের মানববন্ধনে হামলা

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় গত ঈদ উপলক্ষে সরকারের বিশেষ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি-ভিজিএফের চাল না পাওয়া দুস্থ হতদরিদ্র মানুষদের মানববন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার সময় কয়েকজন সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় এক কলেজ অধ্যক্ষসহ কয়েকজন আহত হন। পুলিশ এ ঘটনায় দুই জনকে আটক করেছে।

রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে অয়োজিত মানববন্ধনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন জানান, গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাঘারপাড়া উপজেলার দোহাকুলা ইউনিয়নের এক নম্বর ইন্দ্রা ওয়ার্ডে এ কর্মসূচির আওতায় ২০০ জনের নামের তালিকা করা হয়। তালিকা অনুযায়ী প্রতি ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের মাঝে চাল বিতরণের আগে চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত স্লিপ দেওয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণের দিন স্লিপ জমা দিলে উপকারভোগীকে দশ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু এ ওয়ার্ডের তালিকাভুক্ত ৮০ জন স্লিপ পাননি। সে কারণে তারা চালও পাননি।

ভিজিএফের চাল বঞ্চিত উপকারভোগীরা রবিবার সকালে বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেন। সকাল ১১টায় শুরু হয়ে মানববন্ধনটি সাড়ে ১১টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। মানববন্ধনের প্রায় শেষ পর্যায়ে বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্যা, তার ভাইয়ের ছেলে এমএম রিয়াদ হোসেন, যুবলীগ কর্মী নয়ন হোসেন ও দোহাকুলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ হাসানের নেতৃত্বে কয়েক ব্যক্তি মানববন্ধনে হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে মারধর করেন। মানবন্ধনের খবর সংগ্রহ করতে যশোর থেকে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে যান। ঘটনার সময় দুই জন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়। হামলায় বাঘারপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আজগর আলী আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ এ সময় হামলাকারীদের দুই জনকে আটক করে। আহত আজগর আলী বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বাঘারপাড়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্যা বলেন, ‘আজ সকালে আমি উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে ছিলাম। এ সময় বাইরে কথা কাটাকাটি, মারামারি এবং হাতাহাতি হচ্ছিল। আমি সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। ছোটখাটো একটা ঘটনা ঘটেছে। আমি এর সঙ্গে জড়িত না। সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা সঠিক না। ছেলেপেলেরা একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

পরে রাত ৮টার দিকে ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্যা ও কয়েক জন ইউপি চেয়ারম্যান যশোর প্রেসক্লাবে যান। তারা সকালের ঘটনায় সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

দোহাকুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মোতালেব তরফদার ভারতে অবস্থান করায় তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ওই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ হাসানের ফোনে একাধিকবার কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বাঘারপাড়া থানার ওসি শাহাদত হোসেন বলেন, ‘হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় নয়ন ও ফিরোজ নামে দুই জনকে আটক করা হয়। পরে দুই পক্ষকে ডেকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ না করার জন্য সতর্ক করা হয়। আটক দুই জনকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করা হয়েছে ‘