মহাকবি মধুসূদনের ২০০তম জন্মদিন উপলক্ষে মধুমেলা

অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নয় দিনব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কেশবপুর উপজলার সাগরদাঁড়ী গ্রামে মেলার উদ্বাধন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাইকেল মধুসূদন বারোটি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তার রচিত “দ্য ক্যাপটিভ লেডি” একটি অনন্য সাধারণ উপন্যাস। তার ইংরেজি ভাষায় বহু রচনা রয়েছে, যা অগ্রন্থিত। ইংরেজি সাহিত্যে তিনি প্রতিষ্ঠিত হতে না পেরে বাংলা সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন এবং বাংলা ভাষায় মহাকাব্য রচনা করেন। ৪৯ বছরের জীবনে এই মহাকবি যেখানেই হাত দিয়েছেন, সেখানেই প্রথম হয়েছেন।’

মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে থাকছে সার্কাস, জাদু, মৃত্যুকূপসহ ৩৫১টি বিভিন্ন পসরার স্টলতিনি আরও বলেন, ‘মাইকেল মধুসূদন বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী লেখক, প্রথম আধুনিক কবি, নাট্যকার, অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক, বাংলা সনেটের প্রথম রচয়িতা। পুরনো কাহিনীর ব্যত্যয় ঘটিয়ে তিনি আধুনিক সাহিত্য রচনা করেছিলেন। তিনি সাহিত্যে পথ দেখিয়েছেন। তার পথেই হেঁটেছে অন্যরা।’

প্রধান অতিথি কেশবপুরে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি তার প্রতি একত্মতা ঘোষণা করেন।

যশোর জেলা প্রশাসনের এ আয়োজন করে। মধুমেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন– যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য ইয়াকুব আলী ও যশার-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোছাইন, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুহিন হোসেন প্রমুখ।

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত যশোরের কেশবপুর উপজলার সাগরদাঁড়ী গ্রামে ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করন। তার বাবার নাম রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহ্নবী দেবী। মাইকল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেটের প্রবর্তক। তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ নামের মহাকাব্য। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে– দ্য ক্যাপটিভ লেডি, শর্মিষ্ঠা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেকটর বধ ইত্যাদি। ১৮৭৩ সালর ২৯ জুন বেলা ২টায় মারা যান মহাকবি মধুসূদন দত্ত।

মধুমেলা উদযাপনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুহিন হোসেন।

মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে থাকছে সার্কাস, জাদু, মৃত্যুকূপসহ ৩৫১টি বিভিন্ন পসরার স্টল।