টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে বিপর্যস্ত কক্সবাজারের পর্যটনকেন্দ্রগুলো স্বরূপে ফিরেছে। বৃহস্পতিবার থেকে দুদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সার্বক্ষণিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সপ্তাহিক ছুটির দিনে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শুধু সৈকতের লাবণি, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টেই রয়েছেন লক্ষাধিক পর্যটক। সমুদ্রসৈকতে ঘোরাঘুরি, সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াতের টানা অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে টানা দুই দিনের ছুটিতে চেনারূপে ফিরেছে সৈকতসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর থেকে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। সময়টা খুবই মন্দা গেছে। কোনও পর্যটকই ছিল না। আজ (শুক্রবার) থেকে হঠাৎ পর্যটক বেড়ে গেলো। ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে নিয়ে আরও বেশি পর্যটক আসবেন কক্সবাজারে। পর্যটক আসাতে কিছুটা হলেও লোকসান কাটানোর সুযোগ হয়েছে আমাদের। প্রতিটি হোটেল মোটেল গেস্টহাউসকে বলা আছে অতিরিক্ত ভাড়া যেন আদায় করা না হয়। ইতোমধ্যে কোনও হোটেল অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে এমন অভিযোগ পাইনি। এরই মধ্যে ছাড় চলছে। এক, দেড় কিংবা দুই হাজার টাকার মধ্যে মানসম্মত কক্ষ পাওয়া যাচ্ছে। পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দানে আমরা আন্তরিক। সমুদ্রশহরে পর্যটকরা আসুক, নিরাপদে ঘুরে যাক এটাই কামনা করি।’
ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক চৌধুরী ইবনে ইউসুফ বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন সময় নিয়ে আট বন্ধু মিলে কক্সবাজারে ঘুরতে এলাম। আগামীকাল সেন্টমার্টিন যাবো। শীতকালে কক্সবাজারে বেড়াতে ভালো লাগে।’
যশোর থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শৈলী শবনম বলেন, ‘অনেকদিন থেকে পরিকল্পনা ছিল ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসটা কক্সবাজারে উদযাপন করবো। বৃহস্পতিবার চলে এলাম। এখন সৈকতে পরিবারের সঙ্গে সময়টা বেশ ভালো কাটছে।’
কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘টানা দুই দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে অনেক পর্যটক এসেছেন। তাদের সুবিধার্থে কক্সবাজারে অবস্থানরত হোটেল, হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোর প্রতি কঠোর নজরদারি রয়েছে। পৃথক তিনটি মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। কোথাও অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে তথ্যকেন্দ্র রয়েছে। এসব তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রে কেউ অভিযোগ করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’