সাংবাদিক নাদিম হত্যার নেপথ্যে কারা 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে (৫৩) হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত। তিনি বলেছেন, চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বাবুর নির্দেশে তার ক্যাডার বাহিনী বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এতে তার মৃত্যু হয়। তবে, মাহমুদুল হাসান বাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

গত বুধবার (১৪ জুন) রাতে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গোলাম রব্বানী নাদিমকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে মারা যান তিনি। মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন।

নাদিমের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক নাদিম উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশ করে আসছিলেন। এরই জেরে বুধবার অফিস থেকে ফেরার পথে তার ওপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয় লোকজন নাদিমকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

গোলাম রাব্বানী নাদিম বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু দাবি করেন, তার সঙ্গে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের কোনও শত্রুতা নেই। এ হামলায় তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।

বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, ‘ন্যক্কারজনক এই ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এদিকে, সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যুতে তার পরিবার ও জামালপুর জেলার সাংবাদিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জামালপুর প্রেসক্লাবে এক জরুরী প্রতিবাদ সভা হয়েছে। সভায় বক্তারা নাদিমের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

আরও সংবাদ: দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যু