অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন, হুমকিতে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় নাগর নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রভাবশালীরা অবাধে বালু উত্তোলন করছে। এতে বাঁধ, ফসলি জমি এবং ঘরবাড়ি হুমকিতে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মাটি কাটা চলছে

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা উপজেলা সদরের ধাপসুলতানগঞ্জ হাটের পূর্ব পাশ থেকে নদ তীরবর্তী উত্তরদিকে যোগীপোতা, বলদমারা, পাঁচথিতা, চকবন্যা, শিবতলা, কোচদহ, বটতলা, পাইকপাড়া, চাকলাসহ অন্তত ১৫টি স্থানে ড্রেজার ও শ্যালো মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু তুলছেন। শুধু তাই নয়, নদের তীর থেকে এক্সভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে আশপাশের ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন। এতে নদের তীরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বালু উত্তোলনের কারণে বিভিন্ন স্থানে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যেকোনও সময় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক নদ তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, প্রভাবশালী মাটি ও বালু ব্যবসায়ীরা অনুরোধ সত্ত্বেও বালু ও মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছেন। সারা দিনরাত ট্রাকে মাটি ও বালু পরিবহন করায় গ্রামীণ সড়কগুলো ধসে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আবার বালু তোলার কারণে নদের তীরবর্তী ফসলি জমি ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে।

তারা আরও বলেন, প্রভাবশালী বালু ও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার মেলেনি। মাঝে মাঝে প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়ে মেশিনপত্র জবাদ করা হলেও কিছুদিন পর আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ অবস্থা বিরাজ করলে আগামী দু’তিন বছরের মধ্যে নদের পাশের ফসলি জমি, ভিটে ও বাড়িঘর ধসে নদগর্ভে বিলীন হবে।

মাটি কাটা চলছে

এ প্রসঙ্গে বালু উত্তোলনকারী সেলিম হোসেন জানান, নাগর নদ তীরবর্তী ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা কিনে সেখান থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তিনি বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত নন।

অপর বালু উত্তোলনকারী সাইফুল ইসলাম হাসু বলেন, ‘তিনি ব্যক্তি মালিকানা জায়গা কিনে মাটি উত্তোলন করছেন। এছাড়া তিনি ৪টি জায়গায় বোরিং করে বালু উত্তোলন করেন। বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। তালোড়া থেকে উত্তরে নদের কানাই শিবতলা কালুর ভাটা পর্যন্ত ৬০টি মেশিনে বালু উত্তোলন হচ্ছিল। কারা, কীভাবে কাকে ম্যানেজ করে এই বালু উত্তোলন করছে তা আমার জানা নেই।’

এ ব্যাপারে দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেলেই আমরা অভিযান চালিয়ে মেশিনপত্র জব্দসহ নিয়মিত মামলাও করি। আগামী সপ্তাহে আবারও বালু উত্তোলনের পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’