অর্চনা আর প্রার্থনায় সম্পন্ন কারাম উৎসব (ভিডিও)

হিলিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীবাসীদের কারাম উৎসব

দিনাজপুরের হিলিতে পূজা অর্চনা, ভক্তি প্রার্থনা ও নেচে গেয়ে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে সাঁওতালদের কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উৎসবে করোনা মহামারি থেকে রোগমুক্তি কামনা করেন তারা।

শনিবার দিবাগত রাতে হিলির ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী সাঁওতাল অধ্যুষিত গোহাড়া, বাগমাড়া মালঞ্চা গ্রামে এই কারাম উৎসব পালিত হয়। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের পূর্ণিমাত একাদশিতে এই কারাম উৎসব পালন করে আসছেন তারা। এ উৎসব উপলক্ষে সাঁওতাল তরুণ-তরুণীরা দিনব্যাপী উপোস থাকেন, পরে সন্ধ্যায় পুজা অর্চনা শেষ করে অন্ন গ্রহণ করেন। এরপর শুরু হয় তাদের উৎসব। এ উৎসবে নিমন্ত্রিত ছিলেন হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন, প্যানেল মেয়র মিনহাজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা।

হিলিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীবাসীদের কারাম উৎসব

বাদল টপ্প ও বাসন্তি এক্কা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব কারাম পূজা বা ডালপূজা। প্রতি বছরে একবার ভাদ্র মাসের পূর্ণিমার একাদশিতে এই কারাম পূজা করা হয়ে থাকে। আমাদের পূর্ব পুরুষদের সময় থেকে এই পূজা করে আসছি আমরা। পরিবারের ছোট বড় সকলেই এই উৎসবে যোগ দেয়। প্রথমে আমাদের উপবাস করতে হয়, বিশেষ করে পাঁচজন সদস্যকে উপবাস থাকতেই হয়। এরপরে আখোড়া বন্দনা করতে হয়, সাধারণত গাছের ডাল দিয়ে এই পূজাটা করা হয়। এটা আমাদের মঙ্গল কামনার জন্য, পরিবারের সকলের ও আত্মীয়-স্বজনের মঙ্গলের জন্য। ছেলেরা ডাল কেটে নিয়ে আসে, পরে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা হয়। তারপরে সুতা বাঁধতে হয়, এরপর মাদল বাজিয়ে নেচে গেয়ে তিনপাক ঘুরিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে সেটা মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এরপর আমরা প্রার্থনা করি, আজকে আমরা ভগবানের নিকট প্রার্থনা করেছি সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ একসাথে মিলে মিশে যেন ভালোভাবে থাকতে পারি। আমরা যেন সুন্দর জীবন যাপন করতে পারি, বিশেষ করোনা মহামারির সময়ে আমরা যেন এ থেকে মুক্তি পেতে পারি।

হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় উৎসব এই কারাম উৎসব। আজ তাদের প্রার্থনা পূরণ হোক। সবার জীবনে যেন সুখ শান্তি, সমৃদ্ধি ফিরে আসে এই প্রত্যাশা করছি।