র‌্যাব কর্মকর্তার সহায়তায় বাঁচলো প্রসূতি ও নবজাতকের জীবন

র‌্যাব কর্মকর্তা নিজেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যানরাত প্রায় ১২টা, প্রসব জটিলতায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার শহরতলীর দক্ষিণ উত্তরসুর গ্রামের গৃহবধূ শিল্পী রানী পাল। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া দরকার। কিন্তু লকডাউনের কারণে যেখানে দিনেই রাস্তায় যানবাহন মিলে না, সেখানে রাতের বেলা এলাকার পরিচিত সিএনজি অটোরিকশা চালকরা কেউ হাসপাতালে যেতে রাজি হয়নি। এসময় সাহায্যের আবেদন জানালে এগিয়ে আসেন শ্রীমঙ্গলের র‌্যাব কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। প্রসূতির এক আত্মীয়ের ফোন পেয়েই তিনি গাড়ি নিয়ে সেখানে ছুটে আসেন ও রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছান। সম্প্রতি শ্রীমঙ্গলে এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই নারীর স্বামী রনজিত দাস বলেন, অনেক চেষ্টা করেও কোনও গাড়ি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। ১৫/২০ জন ড্রাইভার আমাকে না করে দিয়েছিল। মনে করেছিলাম, আর হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবো না। ভগবান কপালে যা রাখছে, তাই হবে। এমন সময় র‌্যাব স্যার বাইচ্চার মায়ের জীবনটা বাঁচাইছে। স্যারকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা আমার জানা নাই। বর্তমানে মা ও সন্তান দুই জনই সুস্থ আছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অফিসার হয়েও এএসপি আনোয়ার যেভাবে একজন প্রসূতি নারীকে গভীর রাতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন এবং কোলে করে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। করোনা পরিস্থিতিতে অপরিচিত একজন রোগীকে কোলে নিয়ে বলা যায় তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা নিজেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যানএ ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেন নির্মল পাল নামে ওই প্রসূতি নারীর এক আত্মীয়। যেখানে দেখা যায়, এএসপি আনোয়ার র‌্যাবের গাড়ি থেকে ওই নারীকে কোলে করে নামাচ্ছেন এবং হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্যাপশনে তিনি এই উপকারের জন্য র‌্যাব কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। সবাই এমন ঘটনার প্রশংসাই করেছেন।

এ প্রসঙ্গে র‌্যাব-৯ এর কমান্ডার এএসপি আনোয়ার হোসেন জানান, আমি রাতের টহল ডিউটিতে ছিলাম। হঠাৎ এক ব্যক্তি ফোন করে আমাকে পরিস্থিতি জানিয়ে সাহায্য চান। রে আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক টহল গাড়ি নিয়ে ওই বাসায় পৌঁছাই এবং প্রসূতি নারীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিই।

প্রসঙ্গত, এএসপি আনোয়ার ৩৪তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন উত্তর বড়বিল গ্রামে।