হঠাৎ বর্ষণে জয়পুরহাটে ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেতহঠাৎ বর্ষণে জয়পুরহাটে ক্ষেতে থাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। গত তিন দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে জেলার অধিকাংশ মাঠের ধান গাছ জমিতে পড়ে গেছে। এছাড়া অনেক জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে ভালো ফলন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এতে তেমন ক্ষতি হবে না। জমি থেকে দ্রুত পানি অপসারণের পাশাপাশি আবহাওয়া ভালো হলেই এ শঙ্কা কেটে যাবে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জেলার ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার বটতলী, উত্তর মহেশপুর, নিশ্চিন্তা, মুন্দাইল, কাথাইল ও বালাইট মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অসময়ের বৃষ্টি ও বাতাসে অনেক জমির কাঁচা ও পাকা ধান পড়ে পানিতে ডুবে আছে। আবার বেশ কিছু জমিতে দেখা গেছে, পাকা ধান বৃষ্টির পানিতে জমিতে ভাসছে। কৃষকরা জমির পানি দ্রুত অপসারণের চেষ্টা করলেও পুরো মাঠ পানিতে ভরে থাকায় তা অপসারণ করা যাচ্ছে না। কৃষকরা বলছেন, বেশিদিন পানিতে ডুবে থাকলে ধান চিটা হয়ে যাবে। এতে প্রত্যাশিত ফলন তারা পাবেন না।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটে এবার ধান চাষ হয়েছে ৭৩ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আগাম জাতের ধান রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। স্থানীয় কৃষকরা আগাম আলু চাষের জন্য আগাম জাতের ধান চাষ করেন। বর্তমানে জমিতে এসব ধান পেকে যাওয়ায় তারা এরই মধ্যে কাটতেও শুরু করেছেন। অনেক কৃষক ধান কেটে শুকানোর জন্য গাছসহ জমিতেই ফেলে রেখেছেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের বর্ষণে ডুবে গেছে এসব জমির ধান। বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস হওয়ায় কাঁচা ও আধাপাকা ধানের ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে কৃষকরা দাবি করেন।

ক্ষেতলাল উপজেলার নাজিরপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল গনি বলেন,‘নিশ্চিন্তা মাঠে তিনি স্বর্ণা-৫ জাতের ধান পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টিতে তার পাঁচ বিঘা জমির ধানই জমিতে পড়ে পানিতে ডুবে আছে। তিনি সকাল থেকে জমির পানি অপসারণের চেষ্টা করছেন। দ্রুত পানি অপসারণ করা না গেলে সব ধান চিটা হয়ে যাবে।’

মুন্দাইল গ্রামের কৃষক মাঝহারুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টিতে তার এক বিঘা জমির বিনা-৭ জাতের ধান ডুবে আছে। বাতাসে সব ধানগাছ পড়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে ফলন কমে যাবে।’ একই অভিযোগ করেন মুন্দাইল গ্রামের কৃষক সালাউদ্দিন, নিশ্চিন্তার আলাল উদ্দিন, কাথাইলের আবদুল আলিম ও আবদুল জলিলসহ এলাকার ২৫-৩০ জন কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘গত তিন দিনের বৃষ্টিতে জেলার দেড় থেকে দুই হাজার হেক্টর জমির ধান পড়ে গেলেও ফলনের তেমন ক্ষতি হবে না। রবিবার থেকে আবহাওয়া ভালো হওয়ার পাশাপাশি জমি থেকে দ্রুত পানি নেমে গেলে সবকিছু স্বাভাবিক হবে। এতে কৃষকের দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

শনিবার সরেজমিন তিনি ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।