কুমিল্লা বার্ডে পরিচালক নিয়োগে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিবাদ

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), কুমিল্লাজ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) কুমিল্লায় পরিচালক নিয়োগের অভিযোগে ফ্যাকাল্টি অফিসাররা কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতিবাদ করেছেন। সম্প্রতি দেওয়া নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার (৩০ জানুয়ারি)তারা এ প্রতিবাদ করেন। সকাল থেকেই কর্মকর্তারা বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রাতিষ্ঠানিক কাজ করেন।

তাদের অভিযোগ, পরিচালক পদে যে নিয়োগ হয়েছে তাতে বার্ডের অপেক্ষমান যোগ্যতাসম্পন্ন যুগ্মপরিচালকদের উপেক্ষা করে তুলনামূলক কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জুনিয়র ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বার্ডে দীর্ঘদিন কর্মরত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনুষদ সদস্যদের যোগ্যতাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।

পরিচালক পদের একজন জ্যেষ্ঠ পরীক্ষার্থী বার্ডের যুগ্ম পরিচালক আবদুল কাদের সরকারি ছুটি নিয়ে ওমরাহ হজ করতে দেশের বাইরে অবস্থান করেন। এ সময় তাকে বাদ দিয়ে তড়িঘড়ি এই আয়োজনে বিস্মিত আবদুল কাদের। তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৭ ডিসেম্বর পরিচালক পদে যে নিয়োগ পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয় তার চিঠি ইস্যু করা হয় ২৫ ডিসেম্বর। দ্রুত সময়ে ডাকে চিঠি ইস্যু করলেও একদিনের ব্যবধানে কী করে বাইরের পরীক্ষার্থীদের কাছে চিঠি পৌঁছালো এবং তারা অংশগ্রহণ করলেন। নিয়মানুযায়ী এই আবেদন করতে হয় ফিরতি খামে, সেটা করা হয়নি। দেশে যখন জাতীয় নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন চলছিল তখন এমন আয়োজন নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

জানা যায়, ২০১২ সালে এমনই একটি প্রক্রিয়ায় যুগ্ম পরিচালক পদে অনভিজ্ঞ ও তুলনামূলক জুনিয়র প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। যার প্রতিবাদে বার্ডের অনুষদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম নামে এক কর্মকর্তা চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন।

বার্ড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বার্ডের যুগ্ম পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘শরিফুল ইসলাম নামে ৪০ বছর বয়সী জুনিয়র প্রার্থীকে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শরিফুল ইসলামের বাড়ি রংপুর। শুনেছি মহাপরিচালকের সঙ্গে পূর্বে একটি প্রকল্পে কাজ করেছিলেন তিনি। বার্ডে কখনও এমন নিয়োগ হয়নি। এর প্রতিবাদে বুধবার কর্মস্থলে অফিসাররা কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বার্ডের একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ‘গ্রাম হবে শহর’ সরকারের এই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে বার্ড নিরলসভাবে কাজ করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মরত জ্যেষ্ঠ অনুষদ সদস্যদের ডিঙিয়ে যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাতে সবার মনোবল ভেঙে গেছে। অতীতেও এমন নিয়োগের ফলে অনেকেই বার্ড থেকে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তারা কাজে মনোবল হারালে বার্ড তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন তারা।

বার্ড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.আবদুল মান্নান বলেন, ‘একটি নিয়োগের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না। ডিজি মহোদয় জরুরি মিটিং ডেকেছেন।’

বার্ডের মহাপরিচালক এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই নিয়োগটি সচিবালয় থেকেই হয়। চাকরির বয়স কমবেশি হতেই পারে। এটা নিয়ে প্রতিবাদের কী আছে। তাদের কালোব্যজ ধারণের বিষয়টি আমি জেনেছি।’