সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পাশে আমবাগ মহল্লায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন এসি রবিউলের স্ত্রী ও পরিবার। এখানেই কথা হয় তাদের সঙ্গে। ঘটনার ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও রবিউলের এভাবে চলে যাওয়া এখনও মেনে নিতে পারেননি তারা। জঙ্গি হামলায় রবিউল নিহত হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসন সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতা করেছে। পুলিশ প্রশাসনের আন্তরিকতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তারা।
এসি রবিউলের মৃত্যুর পর জন্ম নেওয়া তার মেয়ের নাম রাখা হয় কামরুন্নাহার রাইনা। এছাড়া তার ছেলে সাজেদুল করিম সামির বয়স আট বছর। আমতলা এলাকার কলাতন বিদ্যানিকেতনে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে সে। রবিউলের রেখে যাওয়া দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে বলে মনে করেন তার স্ত্রী। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রবিউল নিহতের পর সরকারিভাবে যোগ্যতা অনুযায়ী আমাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। জাবি প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলে তারা শিগগিরই চাকরি দেওয়া হবে বলে জানান। কিন্তু ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও চাকরি পাইনি।’
রবিউলের স্বপ্ন ছিল সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করার। তারা যেন বড় হয়ে সমাজে অবহেলিত ও নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করতে পারে। রবিউলের সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে তার একটা চাকরি প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। সরকারিভাবে চাকরি না পেলে এসি রবিউলের সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাবে বলেও আশঙ্কা তার।
রবিউলের মা করিমন নেছাও জানান, তার ছেলে নিহতের পর প্রশাসন ও সরকারিভাবে সহযোগিতা এসেছে। তবুও তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। বিমর্ষ মনে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে এভাবে চলে যাবে মানতেই পারছি না। রবিউল মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।’
পুলিশের ঘোষণা অনুযায়ী যদি উম্মে সালমাকে চাকরি দেওয়া হয় তাহলে রবিউলের দুই সন্তানকে নিয়ে পরিবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করেন করিমন নেছা। সেই সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে নিহত এই পুলিশ কর্মকর্তার স্বপ্ন। তাই তার স্ত্রীর জন্য দ্রুত চাকরির ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছেন করিমন নেছা।
রেঁস্তোরার ভেতরে রাতভর জিম্মি ছিলেন অন্তত ২৪ জন, যাদের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর পরদিন সকালে সেনা কমান্ডো পরিচালিত অপারেশন থান্ডারবোল্টের সময় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাতের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয় আরও অন্তত ৭ জনকে।
অপারেশন থান্ডারবোল্টের পর রেঁস্তোরা থেকে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া পালাতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক রেস্তোরাঁকর্মী। এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন-
অবিন্তা নেই, বেঁচে আছে তার স্বপ্ন
তুমি কোথায়, গুলশানে জঙ্গি হামলা!
দুর্বিসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন তারা
/জেএইচ/