ভারতে কয়লার রিজার্ভ তলানিতে, রামপালের জ্বালানি নিয়ে অনিশ্চয়তা

ভারতের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে কয়লার মজুত আছে আর চার দিনের। দেশটিতে কয়লার এই বিপর্যয়ের প্রভাব বাংলাদেশের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রেও পড়বে কিনা সে প্রশ্ন উঠেছে জোরেশোরে।

বস্তুত ভারতের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এখন যে ধরনের কয়লা সংকটে পড়েছে তা ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি। ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিং স্বীকারই করে নিয়েছেন, আগামী আরও অন্তত ছয় মাস কয়লার সরবরাহ ‘অস্বস্তিকর’ পর্যায়ে থাকবে। 

রামপাল-১

এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের কাছে নির্মিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ পর্যায়ে। কয়লানির্ভর কেন্দ্রটির জ্বালানির পুরোটাই আসার কথা ভারত থেকে। 

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে যুক্ত। সেই সংস্থার সূত্র দাবি করছে, রামপাল নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ এখনও ঘটেনি।

এনটিপিসি’র এক শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ‘রামপাল কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে আরও কয়েক মাস আছে। আশা করা যায় তার আগেই ভারতের কয়লা সংকট কেটে যাবে।’

প্রশ্ন উঠেছে, ভারতে আচমকা বিপুল ঘাটতি দেখা দিলো কেন? 

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মহামারির পর অর্থনীতির চাকা যে আবার ঘুরতে শুরু করেছে তাতেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে এবং ভারতের কোলিয়ারিগুলো সেই চাহিদার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না।

মহামারির আগে আগস্ট ২০১৯-এ যেখানে ভারতে বিদ্যুতের মোট চাহিদা ছিল মোট ১০৬ বিলিয়ন ইউনিট, সেই জায়গায় এ বছরের আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪ বিলিয়ন ইউনিটে। কয়লাখনিগুলোতে উৎপাদন সেই হারে বাড়েনি। আবার, ২০১৯-এ যেখানে ভারতের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ৬২% ছিল তাপবিদ্যুৎ, চলতি বছরে সেটা ৬৬.৫ শতাংশ বেড়েছে। এতেও চাপ বেড়েছে কয়লার ওপর।

এসব কারণে ভারতের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে যেখানে অন্তত ১৪ দিনের মজুত রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়, গত ৪ অক্টোবর সেখানে ১৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে একদিনের মজুতও ছিল না। ৪৫টি কেন্দ্রে মাত্র দুদিন উৎপাদন করার মতো কয়লা অবশিষ্ট ছিল।