‘কালো টাকা সাদা করার কোনও দাবি ব্যবসায়ীদের ছিল না’

‘ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে’— জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলো ব্যবসায়ীদের তিন শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ। সংগঠন তিনটির নেতারা বলেছেন, তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনও দাবি অর্থমন্ত্রীর কাছে জানানো হয়নি।

শনিবার (৮ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ-এর যৌথ সংবাদ সম্মেলন তারা এসব কথা বলেন।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৭ জুন) বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে অপ্রদর্শিত কিছু সম্পদ থাকতে পারে। অসতর্কতার জন্য, অজ্ঞতার কারণে অথবা অন্যের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দেওয়ার কারণে অনেকের সম্পদের তথ্য অপ্রদর্শিত থেকে যায়। এ ধরনের অপ্রদর্শিত অর্থ দেখানো নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বলে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আবেদন এসেছে। এসব ব্যবসায়ী অপ্রদর্শিত সম্পদ দেখাতে চান, তবে এসব সম্পদের উৎসের জবাব তারা দিতে পারছেন না।’ এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল যে, সম্পদ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু জায়গায় বৈধ আয় নিয়ে ব্যবসায়ীরা বেকায়দায় আছেন। এ কারণে আমরা এ প্রস্তাব দিয়েছি।’

ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল ‘কলো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে’— আপনাদের পক্ষ থেকে আসলেই এমন কোনও দাবি ছিল কিনা? এসময় ওই তিন ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতিই বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বলেন, ‘আমাদের এ সংক্রান্ত কোনও দাবি ছিল না।’

এছাড়া ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা, জানতে চাইলে বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ব্যাংক যখন সরকারকে ঋণ দেওয়ার সুযোগ পাবে, তখন আমাদের দিতে চাইবে না। এটাই স্বাভাবিক। এতে করে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, বিগত বছরগুলোতে এমনিতেই বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে।’

বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান বলেন, ‘শুল্ক শূন্য শতাংশ থেকে ১ শতাংশ নির্ধারণ নতুন বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক বা শিল্পাঞ্চলের বাইরে বিনিয়োগ করার জন্য আরও পাঁচ বছর যেন সময় দেওয়া হয়, সেই দাবিও আমরা জানিয়েছি। এই সুযোগ যদি না দেওয়া হয়— তাহলে বিনিয়োগে বড় বাধা হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না এবং রফতানি আয়ও বাড়বে না।’