১৯ দিনে এলো ২১ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার—যার পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। গড়ে প্রতিদিন দেশে আসছে ৯ কোটি ডলার বা প্রায় ১ হাজার ১০৪ কোটি টাকারও বেশি রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রবিবার (২০ এপ্রিল) প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, হুন্ডি ও অবৈধ চ্যানেল কমে আসা, বৈধ পথে ডলারের একক মূল্য এবং ব্যাংকিং খাতে প্রণোদনামূলক ব্যবস্থার কারণে প্রবাসীরা এখন নিয়মিতভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ডলারের বেশি এবং বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৯৯ কোটি ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে আরও ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স।

তবে এ সময়ের মধ্যে ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনও রেমিট্যান্স আসেনি। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।

এর আগে মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে—যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের নতুন রেকর্ড। গত বছরের মার্চে এই অঙ্ক ছিল ১৭১ কোটি ডলার। ফলে এক বছরের ব্যবধানে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৫৮ কোটি ডলার।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে এসেছে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ বছর ৯ মাসেই রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪৭০ কোটি ডলার।

প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্ট থেকে টানা আট মাস ধরে দেশে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসছে। এর মধ্যে ডিসেম্বরে আসে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি এবং মার্চে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার। সরকারের রেমিট্যান্স খাতে নেওয়া নানা সংস্কার ও প্রণোদনা কার্যক্রমে এর ইতিবাচক প্রতিফলন পড়ছে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

রেমিট্যান্স বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।