দুই ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অবস্থান কর্মসূচি

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া দুই ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও হাবিবুর রহমানের পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩০তলা ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর আগে সকালে ব্যাংকের কর্মকর্তারা গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে দুই ডেপুটি গভর্নরকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে আল্টিমেটাম দেন। সেখান থেকে বের হয়ে পরে সর্বদলীয় বিক্ষোভের ডাক দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে যে অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে, তা কর্মকর্তাদের সামনেই হয়েছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে যখনই কেউ প্রতিবাদ করেছে, তাদের বদলিসহ বিভিন্নভাবে হেনেস্তা করা হয়েছে। 

বদলি হুমকির কারণে সৎ ও যোগ্য কর্মীরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি অভিযোগ করে ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এতে সহায়তা করেছে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ওই দুই ডেপুটি গভর্নর।’

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে সংস্কার করতে চেয়েছি সেই কাঙ্খিত সংস্কার করতে পারছি না। কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে যেখানে ছিল সেখানে থেকে তাদের কর্তৃত্ব অব্যাহত রেখেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে থেকে যারা লুটেদারদের সহায়তাকারী কর্মকতাদের দ্রুত বদলি করতে হবে।

ফরেন এক্সচেঞ্জ অপারেশন বিভাগের পরিচালক মো. বায়েজদি সরকার বলেন, গত ৭ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া দিয়েছিল। সেখানে আগের সরকারের আমলে সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সবাইকে পর্যায়ক্রমে চলে যেতে হবে। তবে তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি।

পরিসংখ্যান বিভাগের পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন,  ‘৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। এসব বোর্ড থেকে এখন পর্যন্ত আশানরূপ কোনও সংস্কার দেখতে পাইনি। কারণ এসব ব্যাংকে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা অনেকে স্বৈরাচার সরকারের দোষর ছিলেন। সেখান থেকেও তাদের অপসারণ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সহকারী পরিচালক রিদানুল করিম নাহিদ বলেন, গত সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে লুটপাট হয়েছে, তা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই। সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে কয়েকজন পদত্যাগ করলেও দুজন ডেপুটি গভর্নরকে সাময়িক সময়ের জন্য রাখা হয়েছে। শর্ত ছিল এক মাস পরে নতুন ডেপুটি গভর্নর হলে তারা চলে যাবেন। কিন্তু এই ডেপুটি গভর্নরদের তাদের পদে রাখার জন্য স্বৈরাচারের কিছু দোসর চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছে। এখনও তারা বহাল রয়েছে, শুধু বহাল নয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রসাশনিক ও এইচআরে দায়িত্ব নিয়ে বসে আছে। ওই ডেপুটি গভর্নর দোসরদের বাঁচাতে চেষ্টা চালাচ্ছে।