সংসদে অর্থমন্ত্রী

১০ মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয়রা নিয়ে গেছে ৫১ মিলিয়ন ডলার

চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশিরা ১৩০ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এর মধ্যে ভারতীয়রা তাদের দেশে নিয়ে গেছেন ৫০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন ডলার।

সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা জানান অর্থমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বছরের আয় সংশ্লিষ্ট তথ্য বাংলাদেশে ব্যাংকে সংরক্ষিত নেই। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকেরা তাদের আয় থেকে ১৩০ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।

কোন দেশের নাগরিকরা কত ডলার নিয়েছেন সেই তথ্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতীয়রা ৫০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন ডলার, চীনারা ১৪ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কানরা ১২ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার, জাপানিরা ৬ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার, কোরিয়ানরা ৬ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলার নিয়ে গেছেন। এছাড়া থাইল্যান্ড ৫ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্য ৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান ৩ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ৩ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়া ২ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকরা ২১ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।

চট্টগ্রাম-১ আসনের সরকারদলীয় এমপি মাহবুব উর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মরত কোনও ব্যাংকেই আর্থিক সংকট নেই। তবে কিছু ব্যাংকে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি ও তারল্য সমস্যা বিদ্যমান আছে। এসব সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে কর্মকর্তা ৯টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবং ৭টি ব্যাংকে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।

এমপি আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, খাদ্য ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য উদ্যোগ এবং অসহায় গরিব মানুষকে সুরক্ষা দেবার জন্য যেসব কার্যক্রম চলছে তার প্রভাবে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আমরা মনে করছি।

এমপি আব্দুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির চলমান সংকটের মূলে যে কারণগুলো রয়েছে তা হলো, বৈশ্বিক পণ্য বাজারে সরবরাহে অনিশ্চয়তা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রুটি। অর্থনৈতিক এই সংকট কাটিয়ে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের সরকারদলীয় এমপি এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আমানতকারীরা নানাবিধ স্কিম, ক্ষুদ্র শিল্প খাতসহ আয়-উৎসারী বিভিন্ন খাতে সরাসরি বিনিয়োগ করছেন। ফলে আস্থাহীনতা ও মূল্যস্ফীতির কারণে নয়, বরং বিবিধ বিনিয়োগ প্রকল্প আকর্ষণীয় হওয়ায় ও সরাসরি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।