বর্তমান বাজেট একটি ফাঁকাবুলি: ড. ইফতেখারুজ্জামান

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বর্তমান বাজেট একটি উচ্চাভিলাষী, ফাঁকাবুলির বাজেট। পাশাপাশি এটি বৈষম্যমূলক, সেইসঙ্গে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য একটি অর্থহীন বাজেট।

সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ ও বিরাজমান পরিস্থিতি: অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই বাজেটে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। এটি এমন একটি বাজেট, যা জবাবদিহিহীন। এটি দুর্নীতি সহায়ক ও অনৈতিক বাজেট। এই কথাগুলো বলার অবশ্যই যৌক্তিক কারণ আছে। প্রথমে যদি কালো টাকার বিষয়টি বলি, কালো টাকাকে বৈধতা দেওয়া যাবে না– এমন ঘোষণা কিন্তু আমাদের আছে। আপনি সৎভাবে উপার্জন করে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দেবেন, অন্যজন অনৈতিকতার সঙ্গে দুর্নীতি করে প্রচুর পরিমাণে আয় করে নামমাত্র ১৫ শতাংশ কর দেবেন। আবার এসব বিষয় নিয়ে কোনও প্রশ্নও তোলা যাবে না।

তিনি বলেন, যারা দুর্নীতি করছে তাদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে, লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে সারা বছর অবৈধভাবে আয় করার। বছর শেষে রাজস্ব বিভাগ তাদের ক্লিন সার্টিফিকেট দেবে। অনেকে আবার শুদ্ধাচার পুরস্কার পাবেন, সেরা করদাতার পুরস্কারও পাবেন। এর মাধ্যমে দেশবাসীকে বোঝানো হচ্ছে তোমরা চাইলে এই পথটা অনুসরণ করো। এসবের কারণে আমরা আগামী প্রজন্মকে বলার সাহস পাবো না যে তোমরা ভালো আদর্শ অনুসরণ করো। এই বলার সাহসটা আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। নৈতিকতার যে ভিত্তি তা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান ব্রিফিংয়ে মূল প্রবন্ধে বলেন, আয়করে কোথায় ছাড় আছে সেটা বাজেটে বলা হয়েছে। বড়ভাবে ছাড় কমানো হয়েছে পরোক্ষ করে। গার্মেন্টস, জ্বালানি, মাইক্রোক্রেডিটের মতো প্রত্যক্ষ কর ছাড়ের ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেই, আগামীতে কী করা হবে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা নেই। আয়কর ছাড়ের ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ নগদ অর্থ দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা যাবে। কিন্তু গুলশান এলাকায় ফ্ল্যাট কিনলে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। পুরো বৈধ হবে, সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ১৫ শতাংশ নয়, ২ থেকে ৩ শতাংশ দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। একইসঙ্গে সম্পূর্ণরূপে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। কাউকে কেউ কোনও প্রশ্ন করতে পারবে না, এটা মানা যায় না।