X
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
৫ বৈশাখ ১৪৩২

কেমন চলছে ৭ জেলার লকডাউন

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২২ জুন ২০২১, ১০:১৬আপডেট : ২২ জুন ২০২১, ১১:৩১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সাত জেলায় শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে লকডাউন শুরু হয়। এরই মধ্যে লকডাউন ঘোষিত জেলাগুলোতে প্রবেশ ও বের হওয়ায় মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করেছে পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছেন। সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে নেমেছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা লকডাউন পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। সার্বিক পরিস্থিতি দেখভাল করছেন এসব জেলার প্রশাসকরা।

সাত জেলার লকডাউনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধিরা।

নারায়ণগঞ্জ  

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নারায়ণগঞ্জসহ যাতে ঢাকায় সংক্রমণ ছড়াতে না পারে সে জন্য লকডাউন শুরু হয়েছে। সকাল থেকে বৃষ্টির মধ্যেই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পুলিশ কাজ শরু করেছে। ঢাকা চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়ক দিয়ে যাতে কোনও গণপরিবহন নারায়ণগঞ্জ অংশ দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য পুলিশের বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তবে সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে দায়িত্বপালনে কিছুটা ব্যঘাত সৃষ্টি হয়। শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে নগরীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। খোলেনি দোকানপাট। পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করতে দেখা গেছে।

এদিকে সকাল থেকে বৃষ্টির মধ্যে নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্টস কারখানাগুলো খোলা রয়েছে। শ্রমিকরা বৃষ্টিতে ভিজেই কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে গার্মেন্টেস কর্মরত অফিসের কর্মকর্তারা নগরীতে প্রবেশ করার সময় পুলিশের চেকপোস্টে এসে আটকে যাচ্ছেন। অবশ্য পুলিশের কর্মকর্তারা গার্মেন্টস কর্মী বা কর্মকর্তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন।

নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে। এই সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে- এ কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলায় আগামী সাত দিন কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ নগরীতে লকডাউন ও বৃষ্টির কারণে সড়কে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কম ছিল

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, লকডাউন কঠোরভাবে পালন করতে দুটি মহাসড়কসহ ৩০টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে কাজ চলছে। এই চেকপোস্ট দিয়ে কেউ জেলা থেকে বের হতে পারবে না, বাইরের জেলা থেকে ভেতরে আসতে পারবে না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হতে বলা হয়েছে। তবে পোশাক কারখানা ও জরুরি সেবা চালু রয়েছে। গার্মেন্টস সেক্টরে কর্মরতদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের কর্মস্থলে যেতে সহায়তা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ বলেন, এক সময় করোনার হটস্পট ছিল নারায়ণগঞ্জ। এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে। এই কম সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলায় কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করা হবে। জেলার ৭০ লাখ মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করছেন। তবে জরুরি প্রয়োজনে লোকজন যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

গাজীপুর
গাজীপুরে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া লকডাউন বাস্তবায়নে সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা দেখা গেছে। সড়কে সাধারণ পরিবহন চলাচল ছিল কম। এছাড়া সকাল থেকে বৃষ্টি থাকায় সাধারণ মানুষেরও চলাচল কম ছিল। তবে বিভিন্ন তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। শ্রমিকরাও কারখানায় নিয়মিত দিনের মতোই কাজ গিয়েছেন। অনেক কারখানা শ্রমিকদের আসা-যাওয়া নিশ্চিতে নিজস্ব যানবাহনেরও ব্যবস্থা করেছে।

লকডাউন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গাজীপুরে থেকে পণ্যবাহী যান, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সসহ অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশ জেলার মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন গাজীপুর জেলার বাইরে থেকে আসা যাত্রীরা। পরিবহনের চালকসহ যাত্রীদের অনেকেই লকডাউনের তথ্য জানেন না বলে দাবি করেছেন।

ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা জয়-হীরা পরিবহনের বাসচালক আব্দুল মান্নান বলেন, ময়মনসিংহ শহর থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ভোরে রওয়ানা হয়েছি। গাজীপুরের সীমান্তে জৈনা বাজার এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। পরে লকডাউনের কথা বলে গাড়ি ঘুরিয়ে দিয়েছে।

সকাল থেকে গাজীপুরে গণপরিবহন প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি

ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৌখিন পরিবহনের বাসের চালক নূরে আলম বলেন, মহাখালীর উদ্দেশে যাত্রী নিয়ে গাজীপুরের সীমান্তে আটকা পড়েছি। পুলিশ গাড়ি থামিয়ে গাজীপুরের সীমানায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

গফরগাঁওয়ের পাঁচুয়া থেকে আসা নাজমুল হক বলেন, শ্বশুরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। ভোর ৪টার দিকে রওয়ানা হয়ে সকাল ৬টায় ময়মনসিংহের জামিরদিয়া পর্যন্ত এসেছি। ওখানেই গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। একঘণ্টা অপেক্ষা করেও ঢাকার কোনও যানবাহন পাইনি।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বগারবাজার এলাকা থেকে আসা পোশাক কারখানার কর্মকর্তা রকিবুল হক বলেন, লকডাউনের কথা শুনেছি। কিন্তু, গাড়ি বন্ধ থাকবে তা শুনিনি। ৮টায় গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকার কারখানা অফিসে থাকার কথা। এখন ৩০ কিলোমিটার পথ কীভাবে যাবো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।

হাইওয়ে থানার সহকারী উপপরিদর্শক আতিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর ও ময়মনসিংহের সীমান্ত এলাকা জৈনাবাজারে যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশে পণ্যবাহী এবং অনুমোদিত গাড়ি ছাড়া কোনও গাড়ি গাজীপুরে প্রবেশ এবং বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশ কার্যকর থাকবে বলে জানান তিনি।

গাজীপুরে প্রবেশ করতে পারেনি কোনও গণপরিবহন, বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়

মানিকগঞ্জ
করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে সকাল থেকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আজ অন্যদিনের মতো সড়কে লোকজনের চলাচল ছিল না। স্বাভাবিক সময়ের মতো হ্যালোবাইক, রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কে দেখা যায়নি। কিছু কিছু হ্যালোবাইক ও রিকশা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলতে দেখা গেছে। শহরের সকল মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলো বন্ধ রয়েছে। এদিকে জেলার বিভিন্নস্থানে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রয়েছে। তারা নিজস্ব পরিহন দিয়ে কর্মীদের যাতায়াত নিশ্চিত করেছে।

এছাড়া ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জেলার অভ্যন্তরের কোনও গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার নৈশকোচগুলো পাটুরিয়া থেকে ঢাকার গাবতলী অভিমুখে চলাচল করতে দেখা গেছে।

লকডাউনে মানিকগঞ্জ শহরে দোকানপাট বন্ধ ছিল

ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) প্রশাসন আবুল হোসেন গাজী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সরকারে নির্দেশনার আওতামুক্ত যানবাহন ব্যতিরেকে কোনও গণপরিবহন চলাচল করতে দিচ্ছেন না তারা। পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া ও আরিচা–কাজিরহাট রুটে পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া ফেরিযোগে কোনও যানবাহন পারাপার হচ্ছে না। পাশাপাশি সকাল থেকে উল্লেখিত দুটি রুটে কোনও লঞ্চ ও স্পিডবোটও চলাচল করছে না।

ট্রাফিক পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ দায়িত্ব পালন করে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে।

মুন্সীগঞ্জ
করোনার সংক্রমণরোধে ভোর ৬ টা থেকে মুন্সীগঞ্জসহ সাত জেলায় লকডাউন চলছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত জেলাগুলোতে সার্বিক কার্যাবলি ও জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। লকডাউনে বিপণি বিতানগুলো বন্ধ করা হয়েছে। তবে, জরুরি পরিষেবা চালু আছে।

সকালে মুন্সীগঞ্জ শহরের কেন্দ্রস্থল সুপার মার্কেট চত্ত্বর ও শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুরে দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যায়। তবে, ভোর থেকেই শুরু হওয়া প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও কিছু মিশুক ও অন্যান্য অল্পকিছু যানবাহন চলতে দেখা গেছে। সুপার মার্কেট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ঢাকার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের চলাচল বন্ধে ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কের মুক্তারপুর সেতুর কাছে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ শহরে সকাল থেকে যানবাহন ও লোকজনের চলাচল নেই বললেই চলে
এদিকে, লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌরুটে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে লঞ্চ, স্পিডবোট ও যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ ছিল। তবে, সরকারি নির্দেশনা মেনে জরুরি সেবার আওতায় ফেরি চলছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী পরিচালক সাহাদাত হোসেন জানান, স্পিডবোট আগে থেকেই বন্ধ আছে। তবে, সরকারি নির্দেশনায় সকাল ৬ টা থেকে লঞ্চ ও যাত্রীবাহী ট্রলার বন্ধ আছে।

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্য ছয় জেলার মতো মুন্সীগঞ্জেও সবকিছু বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িত দোকানপাট, যানবাহন চালু থাকবে।

গোপালগঞ্জ
প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ রোধে গোপালগঞ্জে ৯ দিনের ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ চলছে। মঙ্গলবার (২২ জুন) ভোর থেকে এ লকডাউন কার্যকর হয়। লকডাউনের মধ্যে সকালে থেকে সড়কে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল কম দেখা গেছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত চলা লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

ডিসি শাহিদা সুলতানা গণমাধ্যমকে জানান, গোপালগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে, যে কারণে জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে সরকার। বিষয়টি সাধারণ মানুষকে জানাতে সদরসহ পাঁচ উপজেলায় মাইকিং করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হচ্ছে। লকডাউন বাস্তবায়নে সড়কে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।

এর আগে স্থানীয় প্রশাসন করোনা রোধে গোপালগঞ্জ পৌর এলাকা, সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন, কাশিয়ানী উপজেলা সদর ও মুকসুদপুর উপজেলা সদরে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিল। তা চলমান থাকতেই এ আদেশ জারি করা হয়।

মাদারীপুর

করোনা সংক্রমণরোধে মাদারীপুর জেলাকে রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে রাজধানীর সঙ্গে জেলা শহরের সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষ ও সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আইনশৃঙ্লখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সকাল থেকেই সড়কে যানবাহন চলাচল কম ছিল। এছাড়া নিত্যপণ্য ও জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে কাজ করছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বিগত লকডাউনের মতো এবারও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দোকানপাট খোলা থাকবে, হাট-বাজারে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া সব ধরনের অবাঞ্চিত চলাফেরা ও নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সড়কে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, মাদারীপুরের পার্শ্ববর্তী এলাকা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে করোনার সংক্রমণের প্রভাব অত্যন্ত বেশি হওয়ায় সেই বিবেচনায় মাদারীপুরকেও লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।

তবে সোমবারও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। হঠাৎ করেই নির্বাচন চলাকালে লকডাউনের ঘোষণা আসায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা বলছেন- মাদারীপুর সদরে বিগত দুই সপ্তাহে অর্ধশতাধিক স্থানে রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এছাড়া শিবচর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নির্বাচনের পর মানুষের উপস্থিতি ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করার বিষয়টি অনেকটাই অসম্ভব হবে।

এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা, মাদারীপুরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা সর্বশেষ তিন দিনে যথাক্রমে ২৪ ও ২৭ ও ১৮ জন।

রাজবাড়ী

করোনা সংক্রমণরোধে রাজবাড়ীতে কঠোর লকডাউনের কথা বলা হলেও তা অনেকটাই ঢিলেঢালাভাবে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে ইজিবাইক, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে তা সংখ্যায় স্বাভাবিক দিনের তুলনায় কম ছিল। অন্যদিকে লকডাউনের মধ্যে জেলা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শহরের বিভিন্ন স্থানে খাবার হোটেল ও মুদি দোকানসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকলেও সাধারণ মানুষকে অন্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবে বের হতে দেখা গেছে।

প্রসঙ্গত, করোনার ভয়াবহ প্রকোপ থেকে রাজধানী ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখতে সাত জেলায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে। সোমবার (২১ জুন) বিকালে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম লকডাউনের কথা জানান।

/টিটি/
সম্পর্কিত
প্রথমবার লকডাউন চীনের বাণিজ্যিক শহর সাংহাই
প্রথমবারের মতো লকডাউনে কিরিবাতি
একজনের ওমিক্রন শনাক্তের পর পুরো বিল্ডিং লকডাউন
সর্বশেষ খবর
পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইইউর রাষ্ট্রদূতসহ প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
পার্বত্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইইউর রাষ্ট্রদূতসহ প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
২ কোটি ২০ লাখ রুপিতে ‘বেবি এবি’ চেন্নাইয়ে
২ কোটি ২০ লাখ রুপিতে ‘বেবি এবি’ চেন্নাইয়ে
রাজধানীতে আ.লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৬ নেতা গ্রেফতার
রাজধানীতে আ.লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৬ নেতা গ্রেফতার
‘মব’ সৃষ্টি করে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগে স্বাক্ষর
‘মব’ সৃষ্টি করে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগে স্বাক্ষর
সর্বাধিক পঠিত
ঋণের কিস্তি ছাড় স্থগিত রাখলো আইএমএফ
ঋণের কিস্তি ছাড় স্থগিত রাখলো আইএমএফ
২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে খিলক্ষেত-কুড়িল-বসুন্ধরা সড়ক
২৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে খিলক্ষেত-কুড়িল-বসুন্ধরা সড়ক
আসন্ন বাজেটে বৈষম্য কমবে, অগ্রাধিকার পাবে যেসব খাত
আসন্ন বাজেটে বৈষম্য কমবে, অগ্রাধিকার পাবে যেসব খাত
টিপকাণ্ডে ১৮ জনের বিরুদ্ধে সেই কনস্টেবলের মামলা
টিপকাণ্ডে ১৮ জনের বিরুদ্ধে সেই কনস্টেবলের মামলা
পরীক্ষা ভালো হয়নি, বাড়ি ফেরার পর ঘরে এসএসসি পরীক্ষার্থীর লাশ
পরীক্ষা ভালো হয়নি, বাড়ি ফেরার পর ঘরে এসএসসি পরীক্ষার্থীর লাশ