X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

উপহারের ঘর পেয়ে জেলায় জেলায় গৃহহীনদের হাসিমুখ

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৩০আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৩০

মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলার ৬৬ হাজার ১৮৯ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বিতরণের উদ্বোধনের পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে প্রথম ধাপে ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের জমির দলিল ও ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

যশোর

মুজিববর্ষ উপলক্ষে যশোরের ৮ উপজেলায় প্রথম ধাপে ৬৬৬টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী জমিসহ ঘর উপহার দিয়েছেন। ঘর পেয়ে খুশি সুবিধাভোগীরা। শনিবার প্রধানমন্ত্রী এ কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর সুবিধাভোগীদের জমির দলিলসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়। যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এসব দলিল হস্তান্তর করেন।

জমিসহ নতুন ঘর পেয়ে উচ্ছ্বসিত সুবিধাভোগীরা। মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়ায় তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

যশোরে ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠান শাহিনূর বেগম নামে একজন উপকারভোগী বলেন, ‘আমার জায়গা জমি ছিল না। পরের বাড়িতে কাজ আর ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। অনেক কষ্ট করেছি। এখন মা হাসিনা জায়গা দিয়েছেন। ঘর দিয়েছেন। আমি তাতে অনেক খুশি। তার জন্য নামাজ পড়ে মোনাজাত করবো। আমাদের মতো গরিবদের পাশে যেন তিনি সারাজীবন থাকতে পারেন। আমাদের চোখের পানি যেন মুছে যায়।’

হাবিল উদ্দীন নামে একজন ভ্যানচালক বলেন, ‘সংসারে পাঁচজন লোক। মাঠেঘাটে কাজ করে সংসার চালাই। আমার কোনও জমি নেই। প্রধানমন্ত্রী জমি দিছেন, ঘর দিছেন। এগুলো পেয়ে আমি খুব খুশি। বিনামূল্যে জমি-ঘর পাবো কোনোদিন ভাবিনি।’

সদরের রূপদিয়া এলাকার স্বপন শেখ নামে আরেকজন বলেন, ‘পরের ভিটায় থাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে জমিসহ ঘর দিছেন। সন্তানদের নিয়ে পরের জমিতে থাকতি হবে না। এখন আমি আর ভূমিহীন, ঘরহীন না। আমি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করি।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদানের উদ্যোগ নেন। তারই অংশ হিসেবে যশোরের ৮ উপজেলায় এক হাজার ৭৩টি পরিবারকে জমিসহ নতুন ঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে আজ প্রথম ধাপে ৬৬৬টি পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করা হলো। বাকি ৪০৭টি পরিবারকে দ্রুততম সময়ে জমি ও ঘর হস্তান্তর করা হবে।

প্রথম পর্যায়ে যশোর সদর উপজেলায় ২৯০টি, ঝিকরগাছায় ১৯টি. চৌগাছায় ২৫টি, মনিরামপুরে ১৯৯টি, অভয়নগরে ৫৭টি, কেশবপুরে ১২টি ও শার্শা উপলোয় ৫০টি জমিসহ ঘর বুঝে পেয়েছেন সুবিধাভোগীরা।

খুলনা

খুলনা জেলার ৯২২টি গৃহহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসব পরিবারের কাছে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।

এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কাঠালপাড়া গ্রামে একশ’ চল্লিশ জন উপকারভোগীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন, কেএমপি কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিন, খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন প্রমুখ।

খুলনায় গৃহহীনদের দেওয়া ঘর প্রথম ধাপে খুলনার তেরখাদায় ৪০টি, দিঘলিয়ায় ৭০টি, ডুমুরিয়ায় ১৪০টি, ফুলতলায় ৪০টি, রূপসায় ৭২টি, পাইকগাছায় ২২০টি, বটিয়াঘাটায় ১৫০টি, কয়রায় ৫০টি, দাকোপে ১৪০টি পরিবার জমি ও ঘর পেয়েছেন।

এই ৯২২ পরিবারের প্রধানদের মধ্যে ৫৭০ জন দিনমজুর, ৩২ জন শ্রমিক, ৩ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ২০১ জন কৃষক, ৫৮ জন গৃহিনী, ৪ জন প্রতিবন্ধী, ২৮ জন ভ্যানচালক, ১২ জন ভিক্ষুক এবং অন্যান্য পেশার ১৪ জন।

 বাগেরহাট

বাগেরহাটের ৪৩৩টি ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে জমিসহ বসতঘর। এরই মধ্যে ৩৩৬টি পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘর। নির্মাণ কাজ শেষ হলে বাকি ৯৭ জনকেও বুঝিয়ে দেওয়া হবে। শনিবার সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে জমিসহ প্রত্যেকের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক আ. ন. ম. ফয়জুল হক।

এ সময় পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভূঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দীনসহ বিভিন্ন স্থরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে দুই শতাংশ জমিসহ সদর উপজেলায় ৫৪টি, কচুযায় ৩৬টি, রামপাল ১০টি, মোংলা ৫০টি, মোল্লাহাট ৩৫টি, চিতলমারী ১৭টি, ফকিরহাট ৩০টি, মোরেলগঞ্জ ৬টি ও শরণখোলা উপজেলায় ১০টি ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এসব বসতঘরের মালিকানা বুঝে পেয়ে খুশি হতদরিদ্র মানুষ।

প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। ঘরের সঙ্গে থাকছে রান্নাঘর, বাথরুম ও সামনে খোলা বারান্দা। স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা, প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, দিনমজুর ভূমিহীনদের নাম রয়েছে এই ঘর পাওয়াদের তালিকায়।

নোয়াখালী

“আশ্রায়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” স্লোগানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে নোয়াখালীতে ১৫০ ভূমি ও গৃহহীন পরিবার পেলেন ভূমি ও পাকা ঘর। আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের অধীনে এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। নির্মাণ শেষ হলে জেলার মোট ৮৫৫ পরিবার এ ঘর পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে গণভবণন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে ৮৫৫ পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া ১৫০টি ঘর ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করেন। আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে বাকি ৭৫০টি পাকা ঘর হস্তান্তর করা হবে। 

এ সময় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে নোয়াখালীর সদর উপজেলা পরিষদ থেকে সংযুক্ত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাঁন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সামছুদ্দিন জেহান প্রমুখ।

ভূমি ও ঘরের দলিল হাতে পেয়ে উপকারভোগী পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

ফরিদপুর  

ফরিদপুরের ৯টি উপজেলার গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করা এক হাজার ৪৮০টি আধাপাকা ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের ৬৬ হাজার ১৮৯টি ঘরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরপরই ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার সদর উপজেলার গৃহহীনের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল তুলে দেন।

একইসঙ্গে জেলার প্রতিটি উপজেলার গৃহহীনদের মাঝে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ঘর পেয়ে অবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন গৃহহীন এসব মানুষ। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

পটুয়াখালী

“বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” এই স্লোগানে পটুয়াখালীতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫০টি পরিবারকে জমিসহ গৃহের চাবি হস্তান্তর করেছেন। শনিবার সকালে সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের রাঁধনহারা হলে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লতিফা জান্নাতীর সভাপতিত্বে গৃহ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী।

পটুয়াখালীতে গৃহহীনদের দেওয়া হচ্ছে ঘর এ জেলায় মোট ২ হাজার ১৩১টি ঘর দেওয়া হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫০টি, মির্জাগঞ্জে ৩২টি, দুমকিতে ১৯৫টি, বাউফলে ১০টি, দশমিনায় ৪৭টি, গলাচিপায় ১০টি, কলাপাড়ায় ২৩৫টি এবং রাঙ্গাবালীতে ১৫০টি ঘর প্রদান করা হবে।

রাঙামাটি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে রাঙামাটিতে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত পাকা ঘরের চাবি ও জমির কাগজ হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনের পর রাঙামাটিতে উপকারীভোগী ২৬৮টি পরিবারের মাঝে জমির দলিল ও চাবি বুঝিয়ে দেয়া হয়। এ সময় রাঙামাটি জিমনেশিয়াম কক্ষে উপস্থিত ছিলেন  রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬৮টি পরিবারকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৬০টি, কাপ্তাইয়ে ৩০টি, রাজস্থলীতে ৬২টি, বরকলে ১৯টি, বাঘাইছড়িতে৩৫টি, লংগদুতে ৩৪টি এবং নানিয়ারচর উপজেলায় ২৮টিসহ মোট ২৬৮টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ রয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা।

ফেনী 

ফেনীতে ১২৫ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে জেলায় এক হাজার ৮৬৩ পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়।

ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ উপলক্ষে ফেনীতে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২৫টি ঘরের কাজ সম্পন্ন করে তালিকাভুক্ত পরিবারকে জমিসহ ঘরে বুঝিয়ে দেওয়া হলো। একইসঙ্গে প্রত্যেক পরিবারের হাতে কবুলিয়াত দলিল, নামজারি খতিয়ানসহ অন্যান্য কাগজপত্র তুলে দেওয়া হলো।

তিনি জানান, জেলার সদরে ১৪৪টি, সোনাগাজীতে ১ হাজার ৩১৮টি, দাগনভূঞায় ১৬২টি, ফুলগাজীতে ৮৯টি, ছাগলনাইয়ায় ১১২টি এবং পরশুরামে ৩৮টি পরিবার ঘর পাবে। 

সুনামগঞ্জ

“আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” এই স্লোগানে সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলার ৪০৭ দরিদ্র গৃহহীন পরিবার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দরিদ্র-আশ্রয়হীন ৪০৭ পরিবারের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরের চাবি ও দলিল তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন কর্মকর্তাদের।

সুনামগঞ্জে ঘর হস্তান্তর পরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হল রুমে সদর উপজেলার ৫০ জন দরিদ্র গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘরের চাবি ও দলিল তুলে দেন কর্মকর্তারা। এর আগে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের আয়োজনে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ফজলুল কবীর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরীফুল ইসলাম, সদর উপজেলা কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল প্রমুখ।

পাবনা

মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে পাবনায় এক হাজার ৮৬ জন অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের মাঝে দুই শতক জমিসহ গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব হস্তান্তর করেন। পাবনার সব উপজেলা পরিষদ ভবন থেকে একযোগে এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জেলার গৃহহীনদের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিলের ফাইল তুলে দেওয়া হয়।

পাবনা সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়নে সদর উপজেলার গৃহহীনদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এসব ঘরের চাবি তুলে দেন পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ, পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কাজী আতিউর রহমান, ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বেবী ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বিতরণের প্রথম পর্যায়ে জেলার ৯টি উপজেলার এক হাজার ৮৬টি পরিবার গৃহহীন আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় দুই শতক জমিসহ একটি করে সেমিপাকা ঘর পাচ্ছে। এর মধ্যে পাবনা সদরে ৪৪৯টি, সাঁথিয়ায় ৩৭২টি, আটঘরিয়া ৮৫টি, ফরিদপুরে ৫০টি, ঈশ্বরদীতে ৫০টি, চাটমোহরে ৩০টি, সুজানগরে ২০টি, বেড়ায় ২০টি এবং ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ১০টি পরিবারকে ঘর বিতরণ করা হয়েছে।

পাবনায় গৃহহীনদের ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠান জেলা প্রশাসক আরও জানান, বাড়িগুলো ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি দুইটি কক্ষের। এতে আরও থাকছে একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের পাঠানো তালিকা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে যাচাই বাছাই করে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান প্রকল্পের আওতায় মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলার ৫০৮ পরিবারকে জমি ও সেমিপাকা ঘর দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের পরপরই তাদের জমির দলিলসহ ঘর বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।

ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, গজারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম গজারিয়া, উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, সদর উপজেলায় ১০০টি, গজারিয়ায় ১৫০টি, লৌহজংয়ে ১৪৩টি, সিরাজদিখানয় ২৫টি, টঙ্গীবাড়িতে ২০টি ও শ্রীনগরে ৭০টি পরিবার জমি ও ঘর পেয়েছেন। ‘ক’ শ্রেণির পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ভূমিহীন, গৃহহীন ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী ৫০৮ পরিবার দুই শতাংশ জমি ও এক লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘড় দেওয়া হলো।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে প্রথম ধাপে গৃহহীন ৬১৩ পরিবার পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জমিসহ ঘর। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর হস্তান্তরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর টাঙ্গাইলের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জমিসহ ঘরের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনির সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ফারুক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সুব্রত কুমার সিকদার, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক শরীফ নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শহিদ উল্লাহ প্রমুখ।

জেলার ১২টি উপজেলায় মোট এক হাজার ১৭৪ জনকে জমি ও ঘর দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে আজ ৬১৩ জনকে জমি ও ঘরের কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়। 

এছাড়া বরিশাল জেলায় মোট এক হাজার ৫৫৬টি ঘর ও জমির দলিল বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে আজ জেলার ১০ উপজেলায় এক হাজার ৯টি ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়।

নীলফামারীতে শনিবার ৬৩৭টি পরিবারের মাঝে ঘর ও জমির দলির হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে সদরে ৯৯টি, সৈয়দপুরে ৩৪টি, ডোমারে ৩৮টি, ডিমলায় ১৮৫টি, জলঢাকায় ১৪১টি ও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১৪০টি ঘর বিতরণ করা হয়।

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম পর্যায়ে ৭৯২টি ঘর প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৩৪টি, বালিয়াডাঙ্গীতে ৬৫টি, রাণীশংকৈলে ৭০টি, হরিপুরে ২৩৭টি এবং পীরগঞ্জ উপজেলায় ৮৬টি ঘর দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে এক হাজার ২১৭টি গৃহের জমি নির্বাচন ও নির্মাণ কাজ চলমান আছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

পঞ্চগড়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে এক হাজার ৫৭ জন গৃহহীন সুবিধাভোগী পরিবারকে সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২০৮টি, দেবীগঞ্জে ৫৮২টি, বোদায় ৫৫টি, আটোয়ারীতে ৭০টি এবং তেঁতুলিয়া উপজেলায় ১৪২টি ঘর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অর্থায়নে আরও ১১ জনকে এসব ঘর প্রদান করা হয়। সেই হিসাবে জেলায় এক হাজার ৬৮ জন পেলেন নতুন সেমিপাকা ঘর।

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলাতে চান ম্রুনাল
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলাতে চান ম্রুনাল
পিএসজির অপেক্ষা বাড়িয়ে দিলো মোনাকো
পিএসজির অপেক্ষা বাড়িয়ে দিলো মোনাকো
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে আটকা পড়েছে শতাধিক পাইলট তিমি
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে আটকা পড়েছে শতাধিক পাইলট তিমি
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি