X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

টিকা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখার পরামর্শ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৯ জানুয়ারি ২০২১, ২০:২৩আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ২০:২৩

সমাজে করোনার টিকা নিয়ে যেন কোনও বঞ্চনাবোধ তৈরি না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর এজন্য টিকা কার্যক্রমের প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা বজায় রাখার পরার্মশ তাদের। আজ শনিবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনা: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এসব একথা বলেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, সফলভাবে টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য শুরু থেকে এখানে স্বচ্ছতা রাখতে হবে। আর যদি টিকা দেওয়ার প্রথম ধাপে আস্থার সংকট কিংবা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তাহলে পুরো টিকাদান কার্যক্রম ভেস্তে যেতে পারে, তার গ্রহণযোগ্য হারাতে পারে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা.সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যখন কোনও ভ্যাকসিন কেনার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছিল সে সময়ের চেয়ে এখন অপশন অনেক বেড়েছে। একটি উৎস থেকে যে তিন কোটি ডোজ সংগ্রহ করছি, এর পাশাপাশি আরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসবে, তখন বিকল্প উৎস খোঁজার জন্য অন্যান্য বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হবে।

তিনি বলেন, টিকা কার্যক্রমের সফলতা নির্ভর করে স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতার ওপর। যত স্বচ্ছতার সঙ্গে এ প্রক্রিয়াটি হবে, মানুষের সঙ্গে বারবার আলাপ করে হবে, আর তাতে গ্রহণযোগ্য পাবে। যদি মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা নড়বড়ে হয়ে যায় তাহলে টিকা কার্যক্রম সফল হবে না। টিকা কারা পাবে এই প্রশ্নের উত্তর ঠিকভাবে না দিলে সমাজে অস্থিরতা ও বঞ্চনার অনুভূতি তৈরি হবে।

তিনি বলেন, সত্যিকারের ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের দিতে হবে, ঝুঁকিগ্রস্ত মানুষকে সেবা সহায়তা জন্য যারা কাজ করছেন, তাদের দিতে হবে। পর্যায়ক্রমে তুলনামূলক ভাবে কম ঝুঁকিদের দিতে হবে।

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে প্রথমে দেড় কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। কোন দেড় কোটি মানুষকে দেওয়া হবে, সেটা যাতোটা বিজ্ঞান ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং আমাদের দেশের প্রত্যাশার সঙ্গে মেলে- এভাবে যদি না ঘটে তাহলে কিন্তু মানুষের আস্থা এর ওপর কমে যাবে। তাতে করে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভ্যাকসিনেসনের সময়ে প্রভাব পরবে। মূলত এটা নির্ভর করে, স্বচ্ছতার ওপর।

বিশ্বের অনেক দেশে প্রায় অর্ধেক মানুষ টিকা নিতে চাচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, যদি বাংলাদেশে এটা ঘটে, তাহলে কী হবে? কোনও একজন মানুষ যদি ভ্যাকসিন নিতে না চায় তাহলে ওই বাড়ি, বাসায়, অ্যাপার্টমেন্টে, কমিউনিটিতে কেবল তিনি নন, অন্যরাও ঝুঁকিতে থাকবে। এই ঝুঁকির মাধ্যমে ভ্যাকসিনেশনের সুবিধাটাই কমিয়ে দিচ্ছেন।

একইসঙ্গে, ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জুমের মাধ্যমে অংশ নিয়ে বলেন, টিকা নিয়ে মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর কাজ করছে বেশকিছু দিন ধরে। দেশে টিকা বিতরণ পরিকল্পনা করা হয়েছে দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে। তবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের এর বাইরে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, টিকা পাওয়া মানুষের অধিকারের মধ্যে পরে। আমরাও বিশ্বাস করি সবাইকে টিকা দেওয়া দরকার। তবে এটাও সত্যি, টিকা তৈরি করছে কয়েকটি কোম্পানি এবং পুরো বিশ্বে এই কোম্পানিগুলো থেকেই টিকা সরবরাহ করা হবে। তাই আমরা যে একসঙ্গে অনেক টিকা পাবো এটা আনএক্সপেকটেড। তাই কিছু চ্যালেঞ্জকে মাথায় রেখে পর্যায়ক্রমে কীভাবে টিকা দেওয়া হবে, কাদের টিকা দেওয়া হবে- সে প্রায়োরিটি গ্রুপ করা হয়েছে। যাদের সংক্রমিত হবার আশঙ্কা বেশি, যাদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং যারা সংক্রমিত হলে তাদের জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকি বেশি-এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে প্রায়োরোটি গ্রুপ ঠিক করা হয়েছে।

এখন কাজ করা হচ্ছে যারা টিকা পাবেন তাদের তালিকাভুক্ত করা নিয়ে- এটা জানিয়ে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এটা করা হবে। আর এজন্য যে অ্যাপ করা হচ্ছে তার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলেও জানান তিনি। এছাড়া টিকা কোথা থেকে দেওয়া হবে, কাদের মাধ্যমে দেওয়া হবে, জনবলের প্রশিক্ষণ সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে টিকা কেনার টাকা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দিক থেকে যা করার ছিল সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে। টিকা বিতরণ নিয়ে সবকিছু পরিকল্পনা মতোই আগানো হচ্ছে। সবারই টিকা পাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে। এটা একটা চ্যালেঞ্জের জায়গা। এখানে সবার সহযোগিতার প্রয়োজন।

যেহেতু করোনার এই টিকা নতুন, তাই এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিছু থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এ নিয়েও কাজ করবেন তারা।

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ, জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল।

 

 

/জেএ/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা