হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান দীর্ঘ আট মাস পর পুনরায় খুলে দেওয়া হলেও পর্যটক উপস্থিতি খুব কম। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্র ও শনিবার কিছু মানুষকে দেখা যায়। এছাড়া অন্যান্য দিন দর্শনার্থীর সংখ্যা থাকে হাতেগোনা।
উদ্যানে অলস সময় কাটছে গাইড ও কর্মচারীদের। তারা মনে করেন, শীত নামার সঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার কারণে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে বেড়ানোর আগ্রহ নেই।
প্রতিবছর শীত মৌসুমে হবিগঞ্জের সাতছড়িতে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বলা যায় পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে উদ্যান।
উদ্যানের টিকিট বিক্রয়কর্মী সুমা বর্মা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, কোভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে এ বছরের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ১৫০-২০০ জন পর্যটক উপস্থিতি হয়েছিল। এখন গড়ে মাত্র ৩০-৪০ জন আসছেন।
এখন প্রতিদিন বিকালে কিছু পর্যটক দেখা যায়। প্রবেশপথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশিকা থাকলেও বেশিরভাগই মাস্ক ব্যবহার করেন না। অনেকে মুখে মাস্ক রাখলেও যথাযথভাবে।
কয়েকদিন আগে বেড়াতে আসা বিমল দাশ আগে প্রায়ই সাতছড়িতে আসতেন। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও করোনা আতঙ্কে এখন আর নিয়মিত আসা হয় না তার।
কয়েকজন বন্ধুবান্ধব মিলে ঘুরতে এসেছেন লন্ড্রি ব্যবসায়ী হরিদাশ। তিনি মনে করেন, দিনে দিনে করোনার আতঙ্ক কমছে। তার কথায়, ‘এখানকার পরিবেশ ভালো লাগছে। ইচ্ছেমতো ঘুরতে পারছি।’
আরেক ভ্রমণপ্রেমী রহিম মিয়া বললেন, ‘সাতছড়িতে শীত মৌসুমে ঘুরতে এলে বেশ ভালো লাগে। কিন্তু এবার কিছুটা আতঙ্ক নিয়েই ঘুরতে এসে দেখলাম সেই কোলাহল নেই। অনেকটা নীরব চারপাশ।’
সাতছড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার মাহমুদ হাসান স্বীকার করেছেন, করোনাভাইরাসের পর সাতছড়ি খোলা হলেও পর্যটক সংখ্যা আশানুরূপ নয়। আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাতছড়িতে এখন পর্যটকদের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝে মধ্যে দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা আছেন। কোনও ধরনের সমস্যা দেখলে পুলিশকে ফোন দেওয়া হলে তারা আসে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
টিকিট বিক্রির সুপারভাইজার মো. আতাউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সাতছড়িতে পর্যটকদের জন্য নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তার আশা, এগুলো বাস্তবায়ন হলে সবাই উপকৃত হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ ছিল সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। গত ১ নভেম্বর থেকে পর্যটন কেন্দ্রটি আবারও খুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও চা বাগানে বেড়ানো পর্যটকদের গল্প