X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় বিদেশিদের বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উষ্মা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০১ মার্চ ২০২১, ২০:৩৬আপডেট : ০১ মার্চ ২০২১, ২০:৩৬

আইনি হেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) ভুক্ত ১৩টি দেশের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার বিবৃতি দেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

যুক্তরাষ্ট্র সফর উপলক্ষে সোমবার (১ মার্চ) নিজ দফতরে  আয়োজিত  সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটি সব বর্জন করা উচিত। আমাদের মিডিয়ায় অন্য দেশের লোক এসে কেন মাতব্বরি করবে? এ ধরনের নুইসেন্সের পাবলিসিটি দেওয়া আমাদের বন্ধ করা উচিত।’

উল্লেখ্য,কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ওইসিডি-ভুক্ত ১৩টি দেশের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেন।

জেলে মুশতাকের মৃত্যু সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকাতে বহুলোক জেলে মারা যান। সেসব মৃত্যু নিয়ে কোনোদিন কোনও প্রশ্ন হয় না। আপনারা দেখবেন, আমেরিকায় স্কুলে গুলি করে মেরে ফেলেছে, কিংবা শপিং মলে বা রেস্টুরেন্টে গুলি করে মেরে ফেলেছে। এটি নিয়ে কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করে না। কিন্তু, আমাদের দেশ একটি তাজ্জবের দেশ। একজন মারা গেলেই বিদেশিরা উদ্বেগ প্রকাশ করে। দেশের লোক এটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বিদেশিরা করে, এটি একটি তাজ্জবের কথা।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা মিডিয়াও এটি প্রকাশ করেন। আমরা যদি বিদেশের কোনও বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করি, কোনও মিডিয়া এটি প্রকাশ করবে না। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ মারা গেলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত যদি ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে, তবে কোনও মিডিয়া সেটি প্রকাশ করবে না। কিন্তু আমার দেশের মিডিয়াতে এটি প্রকাশ করা হয়।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কোনও বার্তা দেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি আমরা কেন দেবো, এটি আপনার দেন। আমরা সরকারিভাবে কোনো মেসেজ দেই না।’

আল জাজিরা

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে নিয়ে সম্প্রতি আল জাজিরা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত প্রতিবেদনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের টিভিগুলোর সঙ্গে যখন আমার আলাপ হয়েছে, তখন তারা জিজ্ঞাসা করেছে এবং বিষয়টি তুলেছে ভয়েস অব আমেরিকা। বাকি কোনও লোক একটি প্রশ্নও করেনি, আলাপও করেনি। এগুলো হলো বাঙালিদের মাথাব্যথার কারণ।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমার সঙ্গে অনেক কংগ্রেস সদস্য, সিনেটরের আলাপ হয়েছে। কিন্তু কেউই এর ধারে-কাছেও আলাপ করেনি। এটি শুধু বাংলাদেশেই আলাপ করে।’

আল জাজিরার প্রতিবেদনে অনেক অসঙ্গতি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেমন নাটকের একটি জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর পেছনে একটি লোক দাঁড়িয়ে আছে এবং বলছে, সে জেনারেল আজিজের ভাই এবং প্রধানমন্ত্রীর বডিগার্ড। এখন প্রধানমন্ত্রীকে এসএসএফ নিরাপত্তা দেয় এবং এর আগে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নিরাপত্তা দিতেন।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি জিনিস তারা বলেছে— জেনারেল আজিজ সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়া গেছেন এবং তার ভাই তাকে রিসিভ করেছেন। ভাই যেখানে রিসিভ করছে, তার পেছনে ইউরোপিয়ান এয়ারপোর্ট, লোকও ইউরোপিয়ান এবং জেনারেল আজিজ গেছেন কুয়ালালামপুরে। তারপরে দুই জন আলাদা গাড়িতে উঠেছেন। ভাইয়ের  গাড়িতে ইউরোপিয়ান নম্বর প্লেট এবং আজিজ সাহেবের গাড়িতে কুয়ালালামপুরের নম্বর প্লেট।’

সার্ভিলেন্স সামগ্রী সংগ্রহের সঙ্গে জেনারেল আজিজের কোনও সম্পর্ক নেই জানিয়ে একে আব্দুল মোমেনর বলেন, ‘আমি যখন জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলাম, তখন অনেক শান্তিরক্ষী মারা যেত। তখন আমেরিকানরা বিশেষ করে সামান্থা পাওয়ার একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়। তারা প্রস্তাব করলো— মৃত্যু কমানোর জন্য সার্ভিলেন্স সামগ্রী দেবে। আমরা এটিতে সমর্থন করলাম। কিন্তু অনেক দেশ এটি পছন্দ করে নাই। পরবর্তীতে আমেরিকার প্রেসারে সবাই রাজি হয়, যারা শান্তিরক্ষী পাঠাবে তারা সার্ভিলেন্স সামগ্রী দেবে।’

এটি ২০১৬ সালের ঘটনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার তখন সিদ্ধান্ত নিলো, তারা সার্ভিলেন্স সামগ্রী কিনবে। আমরা খুঁজলাম এবং তখন হংকং এর একজন ডিলার পাওয়া গেল ২০১৬ সালে। তারা ২০১৮-তে হাঙ্গেরি থেকে সামগ্রীগুলো সরবরাহ করেছিল। তখনও জেনারেল আজিজ প্রধান হন নাই এবং এখানে তার কোনও ভূমিকা ছিল না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ওনার ভাই দুষ্টু লোক এবং সেজন্য উনিও খারাপ লোক। আমি উনাকে ডিফেন্ড করছি না। যদি সত্যিকার কোনও তথ্য থাকতো, তবে আমরা অবশ্যই তদন্ত করতাম। আল জাজিরা বলেছে, তার দুই ভাই দুষ্টু লোক এবং সেজন্য তিনিও দুষ্টু লোক। আমি ম্যাসাচুসেটসে ছিলাম এবং সেখানকার প্রেসিডেন্ট অব সিনেট ছিলেন বিলি ব্যালজার। তিনি একজন বিখ্যাত লোক ছিলেন। কিন্তু তার ভাই হুইটনি বালজার ছিলেন মাফিয়া গ্রুপের লিডার। বহু লোক মেরেছে এবং পলাতক অবস্থায় দীর্ঘদিন ছিল। বুড়ো বয়সে ক্যালিফোর্নিয়াতে ধরা পড়েছে। দুই ভাইয়ের  একজন হচ্ছেন ফেরেশতা এবং আরেক জন হচ্ছেন মাফিয়া। এক ভাই খারাপ হলে আরেক ভাই খারাপ হবে, এটি ঠিক না।’

 

/এসএসজেড /এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
দিল্লিকে ভয় ধরিয়ে হারলো গুজরাট
দিল্লিকে ভয় ধরিয়ে হারলো গুজরাট
ডিইউজে নির্বাচনে সভাপতি পদের মীমাংসা মামলার শুনানি ২৫ এপ্রিল
ডিইউজে নির্বাচনে সভাপতি পদের মীমাংসা মামলার শুনানি ২৫ এপ্রিল
জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ
জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী