X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘আইনের অপপ্রয়োগ আপেক্ষিক ব্যাপার’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২৩:১৩আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২৩:১৩

দীর্ঘদিন পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মন খুলে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করায় প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার বিকালে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে যেমন তিনি মূল বিষয়ের ওপর বক্তব্য দিয়ে দেশের উন্নয়নের নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তেমনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন। সে সময় তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইনের অপপ্রয়োগ আপেক্ষিক ব্যাপার।’

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু পর থেকে এটিই ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সাংবাদ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। অন্যদিকে গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও আওয়ামী দলীয় রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত থেকে কথা বলেন।

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আলজাজিরা প্রচারিত প্রতিবেদন সম্পর্কে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কোনও প্রতিক্রিয়াও নাই আমার কোনও কিছু বলারও নাই। কারণ একটা চ্যানেল কি বলছে না বলছে কি করছে না করছে সেটা দেশবাসী বিচার করে দেখবে। দেশের মানুষই বিচার করে দেখবে এটা কতটুক সত্য কতটুক মিথ্যা আর কতটুক বানোয়াট আর কি উদ্দেশ্যে তারা করেছে সেটাও বিবেচ্য বিষয়।

আল জাজিরা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়ে বিচার বন্ধ করা হয়েছিলো। যারা দেশের রাষ্ট্রপতি শুধু নয়, একটা গোটা পরিবারকে একটা ছোট শিশুকে পর্যন্ত হত্যা করেছে। সেই খুনিদেরকে কিন্তু ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে চাকুরি দেওয়া হয়েছে বিদেশি দূতাবাসে তাদের নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে জনগণের ভোট চুরি করে পার্লামেন্টেও বসানো হয়েছে। এভাবে তাদের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যারা এটা করেছে তাদের সম্পর্কে আপনাদের কি ধারণা। আমি সন্তান হিসেবে যখন সরকারে আসলাম তখন কিন্তু আমি আমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার করেছি। ইনডেমনিটি বাতিল করে দিয়ে এই বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী, যারা এই দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, নারীর ধর্ষণ করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে লুটপাট করেছে। যাদের বিচার স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুরু করেছিলেন। ‘৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান এসে তাদের মুক্ত করে তাদের মন্ত্রী উপদেষ্টা এবং সরকারের অংশীদার বানায়। যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যারা লিপ্ত আমরা তাদেরও বিচার করেছি। সেই সাথে দুর্নীতি লুটপাট ও অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত যেমন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে শুরু করে এ ধরণের বহু ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরও বিচার হয়েছে। যাদের বিচার হয়েছে সাজাপ্রাপ্ত তারা তাদের দোসর তাদের পরিবার, তারা কি চুপ করে বসে থাকবে না কি? তাদেরও কিছু আমরা দেখি। তাদের কিছু ইন্ধন আছে। আর সেইসঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তো অদ্ভুদ্ধ একটা মিথষ্ক্রিয়া দেখা যায়। আল্ট্রা লেফট, আল্ট্রা রাইট সময় সময় এক হয়ে যায়।

চ্যানেলের কথা শুনে রাজনীতি করিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অপরাধটা কি সেটাই তো আমার বড় প্রশ্ন। সরকার হিসেবে আমরা দেশের জন্য যেভাবে কাজ করেছি এগিয়ে নিয়ে গেছি ১২ বছরের মধ্যে। একবার চিন্তা করে দেখেন তো ২০০৮ সালে কি অবস্থা ছিল ২০০৭ সালে কি অবস্থা ছিল? বা ২০০১ সালের থেকে সেই নির্বাচনের সময় থেকে ২০০৮ পর্যন্ত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কি পরিস্থি বাংলাদেশে ছিল। একবার স্মরণ করেন। আপনারা সাংবাদিকরা স্মরণ করেন। দক্ষিণাঞ্চলে তো সাংবাদিকরাও যেত পারত না। সেই রকম একটা বিধ্বস্ত এবং বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে যখন ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি তার পর পর তো কতগুলি ঘটনা ঘটানো হলো। সেগুলো সামাল দিয়ে প্রতি পদে পদে সমস্ত বাধা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এটা কি খুব সহজ কাজ? তারপরেও আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। এটাকে আমাদের স্থায়ী করতে হাবে টেকসই করতে হবে এবং আমরা তা পারব সে প্রস্তুতি আমাদের আছে। কারণ আমাদের অর্জনটা এতো বেশি যে মাত্রাগুলি দেয়া আছে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্জন আমাদের আছে। আরো বেশি করব। সেটা করার জন্য প্রস্তুতিও আছে পরিকল্পনাও আছে। আমরা সেগুলি সব ঠিক ঠাক করেই কাজ করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা চায় নাই, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, যারা গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে, যারা এই দেশটাকে অস্ত্র চোরাকারবারী, মাদক চোরাকারবারী, দুর্নীতির একটা আখড়ায় পরিণত করে নিজেদের ভাগ্য গড়তে ব্যস্ত ছিল তারা বাংলাদেশের উন্নতিটা মানবে কীভাবে? তারা তো উন্নতিটা মানতে পারেন না। তাদের তো চেষ্টাই থাকবে বাংলাদেশকে কীভাবে বদনাম করতে, বাংলাদেশের দুর্নাম করতে সেটাই তো আমরা দেখতে পাচ্ছি। তবে এটা আমি চিন্তার কিছু দেখি না। আমি মনে করি চিন্তার কিছু নাই, দেশবাসীকে বলব এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নাই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এগুলো মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবার মতো সেই সক্ষমতা আমাদের আছে, জনগণের আছে। এরা তো ওই গোষ্ঠিরও গোষ্ঠি। কোন চ্যানেল কি বলল, না বলল ওটা শুনে তো আমার রাজনীতি না, আমরা দেশের মানুষের জন্য কতটুক করতে পারলাম সেটাই আমার রাজনীতি। যারা বলতে থাকবে বলতেই থাকবে। বলতে থাকুক বলাটাই তো তাদের কাজ। আর জনগণের কাজ করাটা এটা আমাদের কাজ।

আইনের অপপ্রয়োগ আপেক্ষিক ব্যাপার

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এর সমালোচনা প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনেআপন গতিতে চলে। এখন আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে কি না? এটা হলো দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। এখন কোনটা আপনার কাছে অপপ্রয়োগ আর কোনটা অপপ্রয়োগ না, এটা একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। কিন্তু আমি তো মনে করি আইন তার নিজ গতিতেই চলছে এবং চলবে। যদি কেউ অপরাধ না করে তার বিচারে শাস্তি হবে না। কিন্তু আদৌ অপরাধ হচ্ছে কি না বা এমন কোন কাজ করছে কি না যেটা দেশের ক্ষতি হচ্ছে বা জনগণের ক্ষতি হচ্ছে সে কাজটাকে বিরত করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি বলেই আপনাদের সঙ্গে অনেক দিন পরে হলেও দেখা হলো। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছিল বলেই বাংলাদেশের অর্থর্নীতির চাকাটাও সচল রাখতে পেরেছি। অর্থনৈতিক কার্যক্রম করতে পারছি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করতে পারছে প্রত্যেকে কাজ করতে পারছে। এটা হলে তো পারতাম না হয়তো এগুতেও পারতাম না কোথায় যে কি ঘটছে জানতেও পারতাম না। সুযোগটা নেবেন কিন্তু সেই সুযোগটা যেন মানুষের জন্য ক্ষতিকারক না হয় সেটা অবশ্যই দেখতে হবে।   ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন গড়ে ‍তুলেছি তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়াও আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্বটা আমাদের পালন করতে হবে এই কারণে যে ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদের দেশের ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে যুবক থেকে শুরু করে তারা কেউ যেন বিপথে না যেতে পারে।

এ ব্যাপারে আজকের দিনে আর বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে এটুক বলব সমালোচনা যারা করছে তারা করবেই। কারা সব থেকে বেশি সমালোচনা করছে তারা বাস্তব কথাটা কি একবার উপলবদ্ধি করতে পারে? বা উপলবদ্ধি করছে? তারা তো তা করছে না। তিনি বলেন, আমি স্কুল জীবন থেকেই রাস্তায় নামি বা ১৯৬২ সাল থেকে কিন্তু পথে পথে মিছিলে মিছিলে যোগ দিয়েছি। কাজেই এদেশের সবাইকে মোটামুটি চেনা আছে। কোথায় কে কি কারণে কি করেন সেটা আমার জানা আছে। হ্যাঁ কারো মৃত্যু কাম্য নয় কিন্তু সেটাকে কেন্দ্র করে একটা অশান্তির সৃষ্টি করা এটাও কিন্তু কাম্য নয়। অসুস্থ হয়ে মারা গেলে কী করার আছে?

২০২৪ সালে নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৪ আসলে তখন সিদ্ধান্ত নেব, কী করব। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত তার মান ধরে রাখতে হবে।  এজন্য আমাদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আমার মনে হয়, এই কথার মধ্যে সব উত্তর আছে।

সবার টিকা নিশ্চিত করবো

করোনা ভাইরাসের টিকা কবে নেবেন জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, টিকা অবশ্যই নেব। তবে আগে আমার দেশের মানুষের কত শতাংশ মানুষ নিতে পারল, দিতে পারলাম, সেটা আমি আগে দেখতে চাই। আমার একটা টিকার জন্য যদি আর একজন মানুষের জীবন বাঁচে সেটাই তো সব থেকে বড় কথা। আমি তো আছি ৭৫ বছর বয়সে। আজ আছি কাল নেই। হায়াত মউত কে বলতে পারে, যে কোনও দিন যে কেউ আমরা মারে যেতে পারি। আগে আমি খোঁজ নিচ্ছি, আমাদের একটা টার্গেট করা আছে যে এই সংখ্যা পর্যন্ত আগে নির্দিষ্টভাবে দেব, এটা যখন দেব তারপর আমারটা আমি নেব। যদি টিকা বাঁচে তখন দেব।

তিনি বলেন, মহামারি দেখার সাথে সাথে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, আর টিকাগুলি যখন গবেষণা চলে আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে বুক করেছিলাম। যেখানেই পাওয়া যাক আমরা আগে আনব। আমার দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেব এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। আজকে সিদ্ধান্ত দিয়েছি একেবারে প্রাইমারি থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষক কর্মচারী যারা আছে তাদের টিকা দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা হোস্টেলে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশমতো যে বয়স পর্যন্ত দেওয়া যাবে তার উপরের বয়স থেকে সকলকে টিকা দিতে হবে এবং এটা আমরা দেব। কারণ আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত খুলতে চাই। পড়াশোনার পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যারা মানুষের জন্য কাজ করে তাদের টিকা দেওয়াটা আগে জরুরি। আমরা গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রচারণা চালাচ্ছি যাতে সবাই টিকা নিতে আসে। আজকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি আরও ৩ কোটি ডোজ কেনার জন্য। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে প্রথম ডোজ দেওয়ার সঙ্গে দ্বিতীয় ডোজ শুরু করব।

যদি কোনও দেশ উৎপাদন না করতে পারে আমরা আমাদের দেশ উৎপাদন করতে পারব। আমাদের বিভিন্ন ফার্মাসিটিউক্যাল কোম্পানিকে ইতোমধ্যে বলেছি কারা কারা এটা করতে পারবে তার জন্য প্রস্তুত থাকতে এবং এখানে সরাসরি যাতে আনা যায় তার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটাও দেখছি। মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া এটা আমার কর্তব্য। আমি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে না, আমি জাতির পিতার কন্যা এটা হচ্ছে সব থেকে বড় কথা।

করোনা মহামারী মোকাবিলা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কোনো ম্যাজিক নয়। আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধ এর জায়গা থেকে কাজ করেছি। এখানে আমার নয়, বাংলাদেশের জনগণের ম্যাজিক ছিল।

খুশির খবরটি রেহানা প্রথম দেয়

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের খবরটি বাংলাদেশের জন্য আনন্দের ও  গৌরবের। এই গৌরবের সংবাদটি প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে  তার ছোট বোন শেখ রেহানা জানান বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা - এই তিনটি সূচকের ভিত্তিতে জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের তিনটি মানদণ্ডই খুব ভালোভাবে পূরণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ পুনরায় সকল মানদণ্ড অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পূরণের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করলো। জাতিসংঘের পর্যালোচনায় ২০১৯ সালে মাথাপিছু আয়ের মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ১ হাজার ২২২ মার্কিন ডলার। ঐ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৮২৭ ডলার। আর বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার। অর্থাৎ মানদণ্ডের প্রায় ১.৭ গুণ। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদণ্ড ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫.৪। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের জন্য মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ৩২ বা তার কম। কিন্তু ঐ সময়ে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৭।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে প্রায় এক বছর পর আপনাদের সামনে ভার্চুয়ালি হাজির হয়েছি। তবুও সরাসরি না।  আজ একটি মহৎ এবং গৌরবপূর্ণ প্রত্যয়নের সুসংবাদ দেওয়ানা জন্য। বাংলাদেশ গতকাল স্বল্পোন্নত  দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের সুপারিশ লাভ করেছে । আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা করেছি।

তিনি বলেন, সমগ্র  জাতির জন্য এটা অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের । আমাদের এই উত্তরণ এমন এক সময়ে ঘটলো , যখন আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি । আমরা মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে । এসময় বাংলাদেশের জন্য এ উত্তরণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা বলে মন্তব্য করেন তিনি ।

সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। কান্না জড়িত ভারি কণ্ঠে তার উপস্থাপনা শুরুতেই সবার দৃষ্টি কাড়ে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর হাতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। এরপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন।

 

/ এমএইচবি/এফএএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এবার ‘হুব্বা’ নামে হলো গানচিত্র
এবার ‘হুব্বা’ নামে হলো গানচিত্র
আঙুরের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন টিপস
আঙুরের গোড়া কালো হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন টিপস
টেকনাফে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় ২ জন আটক
টেকনাফে ১০ জন কৃষক অপহরণের ঘটনায় ২ জন আটক
এরদোয়ানের যুক্তরাষ্ট্র সফর, যা জানা গেলো
এরদোয়ানের যুক্তরাষ্ট্র সফর, যা জানা গেলো
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!