X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১
ডিরেক্টরস গিল্ড নির্বাচন ২০২১

নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়েও এবার তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী তারা

ওয়ালিউল বিশ্বাস
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:৩৫আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৬

তৃতীয়বারের মতো ব্যালট বাক্সের সামনে দাঁড়াচ্ছেন টেলিভিশন নাট্য নির্মাতারা। আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্বাচন।

এতে সভাপতির চেয়ারের জন্য লড়ছেন সালাহউদ্দিন লাভলু, অনন্ত হীরা ও দীপু হাজরা। আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও এসএম কামরুজ্জামান সাগর।

মজার বিষয় হলো, এই দুটি পদের বেশিরভাগ সদস্যই অতীত অভিজ্ঞতা থেকে নির্বাচন বিমুখ ছিলেন।

বিশেষত সদ্য সাবেক হওয়া সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু দফায় দফায় বৈঠক করে সহশিল্পীদের জানিয়েছিলেন, তিনি এবার আর নির্বাচন করবেন না। অপর সভাপতি প্রার্থী মঞ্চনাটকের জনপ্রিয় সংগঠক অনন্ত হীরাও প্রথম দিকে ছিলেন নির্বাচনি দৌড়ের বাইরে।

আর সাধারণ সম্পাদক পদের মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন না করার স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। 

সবচেয়ে নাটকীয় ছিল সভাপতি পদটির প্রার্থিতা নিয়ে। আগের কমিটির সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই জানান, এবার আর নির্বাচন করবেন না।

গত ৯ জানুয়ারি কমিটির দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচনের তারিখ জানানোর পরই তিনি বিষয়টি উল্লেখ করেন। এরপর সহকর্মীরা দফায় দফায় তার সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু কিছুতেই রাজি হননি লাভলু।

এই সহকর্মীদের তালিকায় ছিলেন অনন্ত হীরাও। তবে তফসিল ঘোষণার আগ দিয়ে মত পরিবর্তন করেন লাভলু। কারণ, নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী না থাকা।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল অনন্ত হীরার কাছেও। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘সংগঠনের ফাউন্ডার সদস্য হলেও আমি কখনোই ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্বাচন করিনি। যখন শুনলাম বড় ভাই সালাহউদ্দিন লাভলু করবেন না, আমি নিজে তাকে বারবার জোর করেছি। এমনকি উনি আমাকে ১ দিনের সময় চেয়ে নিয়েও পরে ‘না’ করে দেন। তখন নিজেরই খারাপ লাগে। নিজে থেকেই প্যানেল গোছানো শুরু করলাম। ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিলাম। এরমধ্যে লাভলু ভাই মত পাল্টালেন!’’

বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার লাভলুকে ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে তিনি জানুয়ারির প্রথম দিকে জানিয়েছিলেন, সংগঠন পরিচালনা করতে গিয়ে কিছু অভিজ্ঞ নির্মাতার খোঁজ পেয়েছেন তিনি। এই নির্মাতারা সংগঠন পরিচালনায় তার থেকেও অনেক দক্ষ। এই দক্ষ আর অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে জায়গা দিতে তিনি নিজেই সরে দাঁড়াচ্ছেন আগামী (আজকের) নির্বাচন থেকে। এটাকে প্রথম কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেও পরিচালনার কাজে ঠিকমতো মন দিতে পারাকে দ্বিতীয় কারণ বলেন তিনি।

তবে অনন্ত হীরার মতে, ‘নির্বাচনের ফল যা-ই হোক না কেন, আমরা আমরাই লড়াই করবো। তাই লাভলু ভাই জিতলেও আমার পরাজয় হবে না।’

অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে জনপ্রিয় নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে এবার নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। এর আগে তিনি আরও দু’বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

তৃতীয় নির্বাচনে ছিল তার চরম অনাগ্রহ। তিনি বললেন, ‘‘আমি গতবারও নির্বাচন করতে চাইনি। এবারও পরিকল্পনা ছিল না। সে জন্য আমার মত ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছিলাম। কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রিতে যারা আমার গুরুজন তারা আমাকে ডেকে নিয়ে বললেন—‘তোমার নির্বাচন করতে হবে’। আমি না বলাতে তারা আরও জোর করেন। বললেন, ‘এই প্রয়োজনটা সংগঠনের। তাই তোমাকে দরকার’। তাই এই ফিরে আসা।’’

এদিকে, প্রথমবারের মতো লড়াই করছেন সভাপতি পদের দীপু হাজরা। তরুণ ভোটারই তার শক্তি বলে মনে করেন তিনি। এই নির্মাতার ভাষ্য, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনই শ্রদ্ধেয় ও অগ্রজ। দুজনের মাঝে আমার বয়সটা কম। আমি সেই তারুণ্যকে কাজে লাগাতে চাই। তাই প্রতিশ্রুতি নয়, নির্বাচিত হলে তারুণ্যের গতিতে কাজ করে সবার মন জয় করতে চাই।’

এবার ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোট ৩৪ জন নির্মাতা। অন্যদের মধ্যে সহ-সভাপতি পদের জন্য দাঁড়িয়েছেন প্রাণেশ চন্দ্র চৌধুরী, ফরিদুল হাসান, মাসুম আজিজ, রফিক উল্লাহ সেলিম ও শিহাব শাহীন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে আছেন চয়নিকা চৌধুরী, ফিরোজ খান ও রকিবুল হাসান চৌধুরী (পিকলু)। সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী তুহিন হোসেন, ফেরারী অমিত ও এসএম মাসুম করিম। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে লড়ছেন মনিরুজ্জামান নাহিদ (নাহিদ জামান) ও মো. সহিদ-উন-নবী। দফতর সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন গোলাম মুক্তাদির (শান) ও মুক্তি মাহমুদ। প্রশিক্ষণ ও আর্কাইভ-বিষয়ক সম্পাদক পদে মোস্তফা মনন ও এসএম শহিদুল ইসলাম রুনু আছেন। তথ্য ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. আনিসুল ইসলাম ইমেল ও সঞ্জয় বড়ুয়া নির্বাচন করছেন। আইন ও কল্যাণ-বিষয়ক পদের জন্য দাঁড়িয়েছেন নিয়াজ মাহমুদ আক্কাস (মাহমুদ নিয়াজ চন্দ্রদীপ) ও সাঈদ রহমান (মো. সাইদুর রহমান আরিফ)।

অর্থ-সম্পাদক পদে মো. সাজ্জাদ হোসেন সনিসহ কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য পদে ৭ জনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগাম নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ মোট ১২টি পদের মধ্যে ১০টিতে লড়াই হবে। কার্যনির্বাহী পদে আগাম নির্বাচিত ৭ জন হলেন- আবু হায়াত মাহমুদ, ইমরাউল হুদা রাফাত, একেএম আনিসুজ্জামান আনিস, কেএম মাহমুদুন্নবী (রিপন নবী), তারিক মুহাম্মাদ হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও হাফিজুর রহমান সুরুজ।

জানা গেছে, আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর বিএফডিসি’র ১ নম্বর ফ্লোরে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে আগামী ১ মার্চ।

এবার ভোটার সংখ্যা ৩৯৬ জন।

জানানো হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অভিনেতা-নাট্যব্যক্তিত্ব এস এম মহসীন। এছাড়া নরেশ ভূঁইয়া ও মাসুম রেজা নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন। আপিল বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন হাসান ইমাম, আবুল হায়াত ও মামুনুর রশীদ।

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
সন্ধ্যা নামিলো শ্যাম: গানে ও চিত্রে মুগ্ধতার সমন্বয়
সন্ধ্যা নামিলো শ্যাম: গানে ও চিত্রে মুগ্ধতার সমন্বয়
রসায়ন পরীক্ষায় ১০ জনের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’!
রসায়ন পরীক্ষায় ১০ জনের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’!
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
শাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা অন্যরকম: চঞ্চল
‘লম্বা’ নায়িকা প্রসঙ্গে কৃতির ব্যাখ্যা
‘লম্বা’ নায়িকা প্রসঙ্গে কৃতির ব্যাখ্যা