মেঘ ঝরলে আকন্দপাতা আনন্দ পায়
হাত বাড়ালেই প্রশস্ত হয় বুক। প্রশস্ততা অসুখের শিরোনাম কিনা! ভাবতে
ভাবতে—বুকের উপর দিয়ে হেঁটে যায় অজস্র পানিপাথরের যুগ। হালকা
বাতাসে তার দুলুনি দেখে মেঘ ঝরে। মেঘ ঝরলে আকন্দপাতাও আনন্দ
পায়। আমি তার মুগ্ধতা দিয়ে দীর্ঘদুপুরের লাল-নীল ঘুড়ি উড়াই।
দূর থেকে দেখে ফেলা ডালিয়া(দে)র চূড়ায় উঠি। চূড়ার বামপাশে একটা
ঝুলন্ত ব্রিজ। যার প্রতিটা ইটের লাল অংশটুকুই আমি। বাকিটার সবটাই
ডালিয়া(দে)র হাসি। আমাদের কারো কোনো ভগ্নাংশ নেই।
বক্ষাংশ ভেদ করে তাই পৌঁছে যাই নিরপেক্ষতায়। নিরপেক্ষতাকে নিজের
পক্ষ ভেবে ভুল করে বসি। আমার ভুলগুলো এখন ইনজয় করতে ইচ্ছে করে।
আমার ইচ্ছের কাছে অনেকেই হেরে যায়। অনেকেই মৃত ভেবে ফেলে
রাখে হিজলতলায়। হিজলতলায় আজ বৃষ্টির দিন। ভেজার আনন্দে আজ
জেগে উঠেবো ফের। জাগলে—ঝরবোও। তুমি কোনো দুঃখ নিও না বন্ধু
আমার; ফুলতো মানুষের বুকের উপরেই ঝরে!
থামুন, এখানে উদ্ধারকাজ চলিতেছে
সুরের প্ররোচণায় গানবাড়ি হেঁটে এসে লিখি—প্রণতির নাম। আমাকে
জিজ্ঞেস করো না—ব্যাথার বকুল কেন এতটা প্রিয় বন্ধু আমার।
বহু আগেই খুন হয়ে গেছে বেশুমার বিশ্বাস। আস্থার ভাঙা আসমান বুকে
নিয়ে হাঁটে ভিতরের গলি। সকাল নেই, রাত্রির নাভি কেটে বলি—বেঁচে
থাকা এখন শুকনো তরমুজের ফালি।
কৌঁসুলি সুনাম ছাড়া সুন্দরের কোনো ঋতু নেই আর। ঘ্রাণের অন্ধকার
য্যানো কোনো এক গানের প্রণালী। ‘সবদিক’ তাই চারদিকের আওতায়
পড়ে। সুতরাং যারা রাষ্ট্রে আছে, যারা ভ্রষ্টেও আছে।
আপনারা নিশ্চয় বুঝি থাকবেন বৈকি
গান না শিখে কেন সুরের দিকে ঝুঁকি!
সুরও আরোপিত হলে ছেড়ে যাব সভা। আমাকে ভুল বুঝে ভুলে
যাবেন?—যান। আপনার সন্তানকে তবু মানুষের স্কুলে পাঠান।
অভিযুক্ত হয়ে বলি, অভিযোগ একধরনের আলো
ধরো, পৃথিবী একটা ইটের কণা, তাকে ঢিল মেরে ফেলে এসেছি জগতের
পুকুরে। কিংবা পৃথিবী একটা চানখারপুল, সিজনাল বাসে চেপে নিয়তই
তাকে পিছনে ফেলি। কিংবা পৃথিবী একটা কথাবলা ঘড়ি, যার প্রতিটি
মুহূর্ত আমাকে রাঙিয়ে দেয়।
আজ আবার মানুষের কথা মনে পড়ল। আর একটা দুপুরগাছের নিচে
নিজেকে ক্রমশ ফুরিয়ে যেতে দেখলাম। তুমিও কি এই গল্পের ভেতর
হারিয়ে ফেলেছ তোমার নিজস্ব সাইকেল?
সাইকেল হারানো মানুষের রং বদলে যায়। আজ আবার ঘুরে ফিরে তাই
একটা কথাই মনে পড়ছে আমার, রাষ্ট্রের কেন মনে পড়ছে না—হারানো
মানুষের কথা!
অহম না অহমিকা, মনে করতে পারছি না
তিনটা থেকে উন্নীত করা হলো ছয়টার কোটায়। নীরবতার বোঁটায় ঝুলিয়ে
দেওয়া হলো সামন্তের চাবি। আর তাতেই অক্সিজেনের বোতল চুষে ঘুম
যায়—খাবি খাওয়া মাছের বেবি। মৃত্তিকায়—ছয়টি ঋতু ছয়দিকে ছড়িয়ে
পড়ে। সমীক্ষার বিচি চিবাতে চিবাতে জীবনের গলা ধরে হাসি। মনোবাসি
আল্লার নামে শোকর করি সাড়ে সাতবার।
একটা চিন্তাশীল বসন্তকাল চুপচাপ বেরিয়ে আসবার কথা। সাতচল্লিশ
পেরিয়ে সাতচল্লিশ চুপচাপ বেরিয়ে আসবার কথা, একাত্তর পেরিয়ে আরো
কিছু একত্তর চুপচাপ বেরিয়ে আসবার কথা। অথচ আমদের বসন্ত এখনও
দূর সম্পর্কের কেউ। যেন সুতা ছিঁড়ে উড়ে গেছে তার ঘুড়ি; মুখের দিকে
তাকিয়ে আছে বৃক্ষবাদী মন। আমরা অমন সহায়তার সবুজ পাবো কই!
রক্তে চুবানো এই পতাকা আমাদের অহম না অহমিকা, মনে করতে পারছি
না। না পারার টিকা-টিপ্পনি লিখে আল্লার নামে অভিযোগ করে বসি সাড়ে সাতবার...।