X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিনের মাহাত্ম্য

হায়দার মোহাম্মদ জিতু
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৫৭আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৫৯

হায়দার মোহাম্মদ জিতু ২৮ সেপ্টেম্বর, মাসের হিসাবে মহাকালের হাজারো অতিবাহিত দিনের মাঝে একটি দিন বা বলা যায় অন্ততকাল অতিবাহিত হবে এমন একটি দিন। কিন্তু এই দিনটি বাঙালির জীবনে ভিন্নরকম মাহাত্ম্য আর অহমের দিন। তবে তা যদি কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে চিন্তা করা হয়। কারণ এই দিন বাঙালির শান্ত সাহস দেশরত্ন শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিন। মাহাত্ম্য আর অহমের প্রাসঙ্গিক কারণ শেখ হাসিনার জন্মজনম এবং একক নেতৃত্বের কারণেই ৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে আবারও বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। তবে তার জন্ম-জীবন সংযম ও সংগ্রামের বাইরে নয়। বিস্তর না টেনে ছোট্ট একটা উদাহরণ, নিজের বড় সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়কেও তিনি জন্ম দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বন্দিত্বের ভেতর। প্রসব বেদনার যাতনা বা কষ্ট একক মা’ই জানেন। সেই মাতৃকষ্টও তাকে দেশের জন্য অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য মানসিক এবং শারীরিকভাবে, একেবারে চিকিৎসাহীনভাবে ভোগ করতে হয়েছে।
তবে কষ্টের এই আকাশ তাকে স্বপ্ন সঞ্চারণ এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে রুখতে পারেনি। বরং প্রত্যেক আঘাত এবং ষড়যন্ত্র তাকে করেছে আরও অনির্বাণ এবং দৃঢ় প্রত্যয়ী। একারণেই শেখ হাসিনার জীবনদর্শনের একটা বিশেষ দিক হলো ধৈর্য, দৃঢ়তা এবং বিশ্বাস। যা মানুষের কাছে উদাহরণস্বরূপ। কারণ যেখানে সামান্য ক্ষমতাকেন্দ্রিক আচরণেই মানুষ ঔদ্ধত্য, নৈরাজ্য ও ভোগ বিলাসিতায় উদগ্রীব হয় সেখানে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় থেকেও তিনি তার হত্যা চেষ্টাকারীদের, তার পরিবারের হত্যাকারীদের এবং দলের আক্রান্তদের দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একজন নাগরিক হিসেবে বিচারিক প্রক্রিয়া চালিয়ে গেছেন।
তিনি নিজেকে ক্ষমতার উত্তাপে না সেঁকে বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য সঁপে দিয়েছেন। স্বপ্নবুকে সাহস হয়ে উঠেছেন। কিন্তু বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য লড়াই করতে করতে নিজের মুক্তি অর্থাৎ নিজের জন্য সামান্য সময়েরও ফুরসত করেননি। নিরন্তর কাজ করে চলেছেন।
ভিন্নভাবে, চারপাশের যে ভোগ-বিলাসিতা এবং চৌর্যবৃত্তির চোরাগুপ্তা মিছিল তাতে বেহুলার একক ভাসান যাত্রার মতোই অর্থাৎ বেহুলা যেমন একাই স্বামীর শব বা মৃতদেহ নিয়ে ভাসছিলেন তেমনি বাঙালির স্বপ্ন-বিশ্বাসের ভেলায় শেখ হাসিনা একাই নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। অর্থাৎ, তিনি আমাদের সেই বেহুলা, আমাদের বোন। যিনি অদম্য আলোয় বেহুলার ওই শবের মতো আমাদের সমস্ত সংকট-সম্ভাবনাকে বয়ে চলেছেন।
তবে তার এই সংকট অনুভবে পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়েরও অংশীদারিত্ব আছে। কারণ বাংলাদেশের সমান বয়সী তার পুত্র ভূমিষ্ঠ হবার পূর্বে ও পরে (মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত) মায়ের সঙ্গেই বাড়িতে গৃহবন্দি ছিলেন। আর এ কারণেই হয়তো আজ তিনি সারথি হয়ে উঠেছেন তার মায়ের স্বপ্ন-বাস্তবতায় অর্থাৎ বাংলার মানুষের জীবন বাস্তবতাকে বৈশ্বিক ও যুগোপযোগী করবার। যার প্রমাণ বৈশ্বিক মহামারিতে পর্যুদস্ত বিশ্ব যেখানে অর্থনৈতিক সংকটে দিশেহারা প্রায় সবকিছু যেখানে তলানিতে সেখানেও বাংলাদেশ পথ চলছে অনেকটা স্বাভাবিক গতিতে।

দেশের প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক রেমিট্যান্স, রিজার্ভ সবই যেখানে বৈশ্বিক রাষ্ট্রগুলোর কমতির পথে সেখানেও বাংলাদেশ লড়ছে বুক চিতিয়ে এবং পূর্বের যেকোনও সময়ের চেয়ে আরও গভীরভাবে। ফলাফল করোনার এই সময়েও উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় দেশ আছে উন্নতির রেকর্ডে। আর এসবই বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্ত এবং তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটালাইজেশন বিপ্লবের কারণে। শুধুমাত্র এই এক প্রযুক্তিগত বিপ্লবের কারণেই বৈশ্বিক মহামারিতেও আবেগ (মানুষে মানুষে সামাজিক সম্পর্ক), বিবেক (মানবিকতা) এবং প্রয়োজন (বাণিজ্যিক প্রবাহ) সবটাই সচল রয়েছে।
বাঙালির পরম ভাগ্য তাদের এই তল্লাটে একজন বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছে। যারা প্রগাঢ়ভাবে মনুষ্যত্ব সম্পন্ন। যার প্রমাণ পিতা বলেছেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত—একদিকে শোষক, অন্যদিকে শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে। আর কন্যা শেখ হাসিনা বৈশ্বিক করোনা মহামারি পরিস্থিতি নিয়ে বলেছেন, ‘সব দেশ যেন সময়মতো এবং একসঙ্গে করোনা ভ্যাক্সিন পায়’। অর্থাৎ গ্রিক মিথোলজিক্যাল চরিত্র নার্সিসিস্ট-এর মতো আপন সৌন্দর্য বা নিজেকে নিয়ে এককভাবে ব্যস্ত না থেকে সকলের জন্য যেন ভাবা হয়। এমন ভাবনা যে প্রাণ ভাবে সে জনমই তো সার্থক, সেই মানুষই তো আরাধ্য।
লেখক: প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ
[email protected]

/এসএএস/এমএমজে/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ধাক্কা মেরে ফেলে চাপা দিলো কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেলচালক নিহত
ধাক্কা মেরে ফেলে চাপা দিলো কাভার্ডভ্যান, মোটরসাইকেলচালক নিহত
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ