ক্রিকেটে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস-এর প্রচলন বছর দশেক আগে। তবে বিপিএলে এবারই প্রথম ডিআরএস ব্যবহার হচ্ছে। আর শুরুতেই প্রযুক্তির সাহায্যে আউটের নিয়মটি প্রশ্নবিদ্ধ।
ডিআরএস-এর জন্য স্নিকোমিটারের প্রয়োজন হলেও বিপিএলে এই প্রযুক্তি নেই। তাই বল ব্যাট স্পর্শ করে উইকেটের পেছনে গেছে কিনা তা বোঝারও উপায় নেই। সেজন্য টিভি আম্পায়ারকে আউটের সিদ্ধান্ত দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
বিপিএলের প্রথম দুই দিনেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ডিআরএস। রবিবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স-সিলেট সিক্সার্স ম্যাচের ঘটনা। সিলেটের আল আমিনের বল কাট করতে চেয়েছিলেন হঠাৎ কুমিল্লার অধিনায়কত্ব পাওয়া স্টিভেন স্মিথ। তবে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়কের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। ফিল্ডাররা সমস্বরে আউটের আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। সিলেট রিভিউ নিলে আউটের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন টিভি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা। কিন্তু স্নিকোমিটার ছাড়া কি ব্যাটে-বলে সংযোগ বোঝা সম্ভব?
শনিবার উদ্বোধনী দিনে দুটি বিতর্কিত ঘটনার জন্ম। দুটি ঘটনাই ছিল ঢাকা ডায়নামাইটস-রাজশাহী কিংস ম্যাচে। রাজশাহীর কায়েস আহমেদের বল আড়াআড়িভাবে খেলতে চেয়েছিলেন ঢাকার আফগান ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই। উইকেটকিপার জাকির হাসান বল গ্লাভসবন্দি করলে আউটের আবেদন করেন রাজশাহীর ফিল্ডাররা। ফিল্ড আম্পায়ার সাড়া না দিলে ডিআরএস-এর দ্বারস্থ হয় রাজশাহী। টিভি আম্পায়ার স্লো-মোশনে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেন নট আউট। যদিও সিদ্ধান্তটা ছিল বিতর্কিত।
ওই ম্যাচে পরের ইনিংসে আন্দ্রে রাসেলকে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েন মোহাম্মদ হাফিজ। এবার ফিল্ড আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান।
টিভি আম্পায়ারদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। স্নিকোমিটার ছাড়া শুধু শব্দ শুনে তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়া খুবই কঠিন। ডিআরএস ছাড়াও এবার বিপিএলের টিভি সম্প্রচারে যুক্ত হয়েছে ড্রোন ক্যাম, স্পাইডার ক্যামের মতো আধুনিক প্রযুক্তি। তবে স্নিকোমিটার না থাকায় রিভিউ ব্যবহারে দেখা দিয়েছে জটিলতা। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল অবশ্য টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ৭টি দলকে জানিয়েছিল স্নিকোমিটার না থাকার কথা।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এ নিয়ে বেশ বিরক্ত। তিনি বললেন, ‘ডিআরএস নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কথা হয়েছিল। আসলে স্নিকো ও আল্ট্রা এজ আনতে অনেক টাকা লাগে। সেজন্য হয়তো আয়োজকরা এটা প্রভাইড করতে পারেনি। এ বিষয়ে আমরা আগেই জানতাম। তাই আমাদের কিছু বলার উপায় নেই। আমরা জানতাম ডিআরএস-এ শুধু হক-আই থাকবে, অন্য কিছু থাকবে না। আমরা অবশ্য বলেছিলাম এ ধরনের রিভিউ সিস্টেম থাকলে খুব একটা লাভ হবে না। এলবিডাব্লিউয়ের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত হলেও অন্য আউটের ক্ষেত্রে সন্দেহ থেকেই যাবে।’
সালাউদ্দিন তাই বাড়তি খরচ হলেও রিভিউ সিস্টেমে স্নিকোমিটার রাখার পক্ষে, ‘আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশ। আমার তো মনে হয় স্নিকোমিটার অবশ্যই রাখা উচিত।’