X
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
২৮ চৈত্র ১৪৩১
রামুতে হামলার সাত বছর

দুর্বৃত্তের হামলায়ও ছিন্ন হয়নি সম্প্রীতির বন্ধন

কক্সবাজার প্রতিনিধি
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১২:১২আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:১৬

রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে হামলা, ফাইল ছবি কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে হামলা চালিয়েও সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নষ্ট করতে পারেনি দুর্বৃত্তরা। ওই হামলার ৭ বছরে পরও রামুর বাসিন্দাদের সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রয়েছে। তবে ওই ঘটনার বিচার কাজ নিয়ে হতাশ রামুর বাসিন্দারা। ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে  দুষ্কৃতকারীরা রামুর বৌদ্ধ পল্লিগুলোয় হামলা চালায়। রামুর বাসিন্দা উত্তম বডুয়ার ফেসবুক আইডিতে পবিত্র কোরআন অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এতে কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ১৩টি বৌদ্ধ বিহার এবং ৩০টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভেঙে ফেলা বৌদ্ধ বিহার ফের নির্মাণ করা হয়েছে।

ঘটনার ৭ বছর পর সেই দিনের স্মৃতি কিছুটা ম্লান হলেও ভুলে যাননি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ। সেদিনের কথা মনে করে এখনও আঁতকে ওঠেন তারা। তবে তাদের বিশ্বাস, রামুতে আগের মতো সম্প্রীতি এখনও বিরাজ করছে। কিন্তু তারা হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়েছেন। বৌদ্ধ মন্দিরে হামলায় জড়িতরা এখনও আইনের আওতায় না আসায় হতাশ তারা। অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে হামলা, ফাইল ছবি এ বিষয়ে রামু উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মৌলানা নূরুল হাকিম বলেন, ‘ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা সমর্থন করে না। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলাম, এখনও জানাচ্ছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি চাইছি।’

বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ডেভেলপমেন্ট কক্সবাজার শাখার চেয়ারম্যান সুরেশ বড়ুয়া বাঙ্গালী বলেন, ‘আমরা এখনও সুষ্ঠু বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। প্রকৃতপক্ষে যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। আমরা চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।’

রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, ‘২০১২ সালে যে ঘটনা ঘটেছে, তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে রামুর ঘটনায় যে মামলাগুলো হয়েছে এতে কোনও সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় এবং প্রকৃত আসামিরা যাতে শাস্তি পায়।’

রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে হামলা, ফাইল ছবি কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ২০১২ সালে রামুতে হামলা এবং ২০১৭ সালে রাখাইন থেকে এদেশে রোহিঙ্গা আসার পর বৌদ্ধ সম্প্রদায় কিছুটা আতঙ্কে ছিল। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পদক্ষেপে তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

প্রসঙ্গত, রামুর বৌদ্ধ বিহারে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১৯টি। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ১৮টি মামলা করে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে একটি মামলা করলেও পরে বিবাদীদের সঙ্গে আপসনামা দিয়ে খালাস করেছেন। বিচারাধীন ১৮টি মামলায় সাক্ষী না পাওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। 

/এসটি/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘জংলি’ ৫/১০: জন্ম না দিয়েও আদর্শ বাবা হতে পারার ছবি
‘জংলি’ ৫/১০: জন্ম না দিয়েও আদর্শ বাবা হতে পারার ছবি
অর্থনীতি কি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে?
অর্থনীতি কি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে?
যুক্তরাষ্ট্রে নদীতে পড়লো হেলিকপ্টার, শিশুসহ নিহত ৬
যুক্তরাষ্ট্রে নদীতে পড়লো হেলিকপ্টার, শিশুসহ নিহত ৬
বঙ্গোপসাগর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৪ ট্রলারে ডাকাতি
বঙ্গোপসাগর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৪ ট্রলারে ডাকাতি
সর্বাধিক পঠিত
ধর্ষণের ব্যথা সইতে না পেরে আল আমিনকে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি: পিবিআই
ধর্ষণের ব্যথা সইতে না পেরে আল আমিনকে হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তি: পিবিআই
আইএস-আল কায়েদার পতাকা নিয়ে মিছিল, ক্ষুণ্ন হচ্ছে ভাবমূর্তি
আইএস-আল কায়েদার পতাকা নিয়ে মিছিল, ক্ষুণ্ন হচ্ছে ভাবমূর্তি
মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের জন্মাষ্টমীর ধর্মাচার: হেফাজত
মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের জন্মাষ্টমীর ধর্মাচার: হেফাজত
চীনের জন্য পাতা ফাঁদে শিকার এখন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই?
চীনের জন্য পাতা ফাঁদে শিকার এখন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই?
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর রফতানি করা ৪ ট্রাক পণ্য ফেরত পাঠালো ভারত
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর রফতানি করা ৪ ট্রাক পণ্য ফেরত পাঠালো ভারত