নরসিংদীতে অপহরণের পর বায়েজিদ ইব্রাহিম (১৪) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় অপহরণকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বায়েজিদের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অপহরণের শিকার বায়েজিদ শিবপুর উপজেলার ভরতেরকান্দি এলাকার ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছের ছেলে এবং নরসিংদী শহরের জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
গ্রেফতার ছয় জন হলো—শিবপুরের ভরতেরকান্দি এলাকার শামসুল হকের ছেলে খালেদ মিয়া (২৫), সাধারচরের নাজমুল হাসানের ছেলে মেহেদী হাসান (২০), দক্ষিণ কারারচরের বাবুল মিয়ার ছেলে তাজুল ইসলাম (১৭), পলাশ উপজেলার ধনাইয়া এলাকার বশির মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (১৮), পলাশের বক্তারপুর এলাকার রাশেদুল ইসলাম (২১), বেলাব উপজেলার মরিচাকান্দা এলাকার উত্তম কুমার দাসের ছেলে ও শিবপুরের মধ্য কারারচর এলাকার ভাড়াটিয়া নয়ন দাস (১৯)। এ ঘটনায় জড়িত রায়পুরার পলাশতলী এলাকার সৌরভ (২০) নামে আরও একজন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে পরীক্ষা শেষে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরছিল বায়েজিদ ইব্রাহিম। মাদ্রাসার অদূরে বনবিভাগ এলাকায় পৌঁছালে অপহরণকারীরা বায়েজিদকে জোরপূর্বক একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে নেয়। পরে তাকে জেলার রায়পুরা, বেলাব, মাধবদী, পলাশসহ বিভিন্ন স্থানে জিম্মি করে রাখে। ওই দিনই অপহরণকারীরা ফোন করে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে; অন্যথায় হত্যার পর লাশ গুম করে রাখার হুমকিও দেয় তারা। বিষয়টি অপহৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে বলা হলে, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জাকারিয়া আলম ওই রাতেই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পলাশ উপজেলার দড়িচর এলাকায় অভিযান চালান। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা বায়েজিদকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত গাড়ির নম্বরের তথ্য ও একটি সিএনজি পাম্পের সিসি ফুটেজ দেখে রাশেদুল নামে একজনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘অপহরণকারীরা অল্প সময়ের মধ্যে ধনী হওয়ার ইচ্ছে থেকেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই ছাত্রকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে।’