আজ ১৭ এপ্রিল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী আঁখিরা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বারাইহাটের ১০০ গজ দূরে আঁখিরা নামক পুকুরপাড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের হাতে প্রাণ হারায় ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আজও সংরক্ষণ করা হয়নি এই ঐতিহাসিক বধ্যভূমিকে। নির্মাণ করা হয়নি কোনও স্মৃতিস্তম্ভ।
মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ফুলবাড়ী উপজেলার রামভদ্রপুর, নবাবগঞ্জ উপজেলার খোশলামপুর ও পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বাধদিঘী গ্রামের ও রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার পাঁচ শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ও শিশুদের ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, রামভদ্রপুর গ্রামের রাজাকার কেনান সরকার তাদের আঁখিরা পুকুর পাড়ে নিয়ে আসে। সেখানে তাদের কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিরীহ মানুষদের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাদের দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়।
এতে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যাওয়া ওই দলের সহযাত্রী উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা রাখাল চন্দ্র (৬১)। তিনি জানান, রাজাকার কেনান সরকারের কথায় বিশ্বাস করে যাত্রা শুরু করেছিল চার উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ। কিন্তু তাদের বিশ্বাস এভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে তারা বিন্দুমাত্র বুঝতে পারেনি।
ফুলবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এছার উদ্দিন বলেন, রাজাকার কেনান সরকার শুধু ওই পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির প্রাণই নেয়নি তার হাতে নিহত হয়েছে ফুলবাড়ীসহ কয়েকটি উপজেলার কয়েক হাজার নিরীহ মানুষ। তাই যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তার মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুল বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে স্মৃতিস্তম্ভের কাজ শুরু হবে।