X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০
ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ মামলা

সাজা হলেও টাকা আদায় হয় কমই

শফিকুল ইসলাম
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১০:১৮আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ১১:৫৭

অর্থ আত্মসাৎ ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম দুর্নীতি, ঋণ কেলেঙ্কারি, জালিয়াতির নতুন-নতুন ঘটনা ঘটছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও অর্থ উদ্ধার হয় না। মামলায় গ্রেফতার, সাময়িক বরখাস্ত কিংবা চাকরিচ্যুত হলেও লাভবান হন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা।
আদালতের রায়ে আত্মসাৎ হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়া না গেলে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ থাকে। অধিকাংশ মামলায় দেখা যায়, আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত না দিলে সাজা খাটতে হয় অপরাধী কর্মকর্তাকে। সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিজের নামে করা সম্পদ খুঁজে পাওয়া যায় না।যেটুকু পাওয়া যায়, তা আত্মসাৎকৃত অর্থের তুলনায় খুবই নগণ্য। সে কারণে লোভী কর্মকর্তারা টাকা মেরে দিয়ে গ্রেফতার হলে অনেকটাই বেঁচে যান বলে মনে করেন তারা। যেমন পাওয়া যায়নি হলমার্কের নামে আত্মসাৎ করা টাকাও। তেমনি পাওয়া সম্ভব নয় বিসমিল্লাহ গ্রুপের নামে আত্মসাৎ করা টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জেলে রয়েছেন। চূড়ান্ত রায়ে সাজা হলেও এক সময় ঠিকই বেরিয়ে আসবেন—এটা তাদের বিশ্বাস। কারণ অর্থ আত্মসাতের মামলায় ফাঁসি তো আর হবে না।  
এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রদীপ দত্ত বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করলে রেহাই পাওয়া যায় না। প্রথমে চাকরি হারাতে হয়। বিভাগীয় মামলা ও ফৌজদারি উভয় মামলাই হয়। মামলার রায়ে টাকা ফেরত দিতে হয়। না দিলে সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়। এবং বিভাগীয় মামলায় সে পেনশন সুবিধা হারায়। ফলে আগের সেই দিন আর নেই, যে ব্যাংকের টাকা নিলে তা আর ফেরত দিতে হয় না। অথবা ব্যাংকের যে কর্মকর্তা ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে সে রেহাই পায়।

এ প্রসঙ্গে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ব্যক্তিগত সমস্যা। এটার জন্য ব্যাংক দায়ী নয়। ব্যাংকে কোনও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ে দেখা হয়। প্রমাণ মিললে বিভাগীয় মামলা হয়। প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলাও হয়। বরখাস্ত, সাজা সবই হয়। টাকা মেরে দেওয়ার দিন আর নেই।
উল্লেখ্য, টাকা আত্মসাতের এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যে সব ঘটনায় মামলা হয়েছে, বরখাস্ত হয়েছে। জেল হয়েছে বা সাজা হয়েছে—কিন্তু টাকা পাওয়া যায়নি। ভবিষ্যতেও পাওয়া যাবে না। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মামলার সাক্ষী-সাবুদ না পাওয়ায় মামলাও খারিজ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মিজানুর রহমান নামের ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছিল সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ।
অর্থ আত্মসাৎ অভিযোগ আছে, সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার সহকারী কর্মকর্তা  মিজানুর রহমান পে-অর্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬৬ টাকা আত্মসাৎ করে এবং আত্মগোপনে যায়।  ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অডিট করলে বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তারা মিজানুর রহমানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। শাখা ব্যবস্থাপক রহিম উল্যাহ খোন্দকার বাদী হয়ে মিজানুর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। একই কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফেনী শহরের ইসলামপুর শাখায় কর্মরত থাকা অবস্থায় আরও ৮ লাখ টাকা একই কায়দায় আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। মিজানুর রহমান গ্রেফতার হয়ে অনেকটাই বেঁচে গেছেন। কারণ মামলা চললেও তার পক্ষে এত টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে না।
হলমার্কের ঋণ জালিয়াতি মামলায় সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংক শেরাটন শাখার ব্যবস্থাপক একেএম আজিজুর রহমান, সোনালী ব্যাংকের জিএম মীর মহিদুর রহমান, ডিজিএম শেখ আলতাফ হোসেন ও সফিজউদ্দিন আহমেদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত বছরের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় ১১টি মামলা (ফান্ডেড অংশের) দায়ের করে দুদক। মামলায় হলমার্ক গ্রুপের ৭ কর্মকর্তা, সোনালী ব্যাংক শেরাটন শাখার ৫ কর্মকর্তা, সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের আইটিএফডি, অডিট ও ইন্সপেকশন-২ সিএডি, টিএমডি বিভাগের ১৫ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। এরপর তদন্ত পর্যায়ে ১ জানুয়ারি আরও ২৬টি মামলা (নন-ফান্ডেড অংশের) দায়ের করা হয়। সর্বশেষ ২৮ মে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা চলছে। টাকা আদায়ের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, ফরিদপুরে গ্রাহকদের জমাকৃত ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর সদরপুর শাখার অফিসার (ক্যাশ) জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী শিউলী আক্তারকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক জানায়, ২০০৫ সালের ১৪ মার্চ থেকে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকের ১৩৮ জন গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ আসামিরা জমা না করে আত্মসাৎ করেন। এই অভিযোগে ২০১২ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন ব্যাংকের ওই শাখার ম্যানেজার আব্দুল জলিল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে এ মামলার দায়ভার দুদকের হাতে আসে।

সূত্র জানায়, জাকির হোসেন গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করে তার স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখেন। এ মামলাটি চলছে। টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলায় বেসিক ব্যাংকের সাবেক দুই উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুস সোবহান, মো. সেলিম এবং সহকারী মহাব্যবস্থাপক শিপার আহমেদকে গতবছর গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ৩ জনকে বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করেছে। অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলা চলছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে ৫৬টি মামলা করে দুদক। এই কর্মকর্তারা ওই মামলার আসামি।

সাজা সোনালী ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেসমিন তানভীর মাহমুদের স্ত্রী। র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৪-এর একটি যৌথ দল মানিকগঞ্জ থেকে জেসমিন ইসলামকে গ্রেফতার করে।  বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থ জালিয়াতির মূলহোতা হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে তানভীর মাহমুদ কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন জেসমিন। একই মামলায় হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদকেও গ্রেফতার করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, তানভীর মাহমুদ সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সহায়তায় সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন) শাখা থেকে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

হলমার্ক জালিয়াতির ঘটনায় এলসি জালিয়াতির ঘটনা নন ফান্ডেড ঋণের বিষয়ে জানতে জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার ইশরাত জাহান, দিলকুশা শাখার এজিএম আবুল হাসেম, জনতা ব্যাংকের অফিসার নরেশ চন্দ্র দাস, লোকাল অফিসের কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, করপোরেট শাখার ইও জিনিয়া জেসমিন ও ম্যানেজার ফয়জুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। হলমার্কের ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা এলসি জালিয়াতির কারণেও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এটুকুই শেষ। আত্মসাৎকৃত টাকা আর আদায় হয় না। ভবিষ্যতেও হবে না। ব্যাংকে জমা রাখা সাধারণ গ্রাহকদের আমানত এভাবেই খেয়ানত করেছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এভাবে ব্যাংকের টাকা লুটপাট হওয়ায় চরম মূলধন সংকটে পড়তে হয়। বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে। এর জন্য বছরজুড়ে নগ্ন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রভাবও দায়ী বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে,  এই মূলধন ঘাটতি মেটাতেই সরকার বাজেটের অর্থ থেকে ৪ হাজার ১০০ কোটি অর্থ সহায়তা দিয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংককে। এছাড়া বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, ন্যাশনাল ব্যাংকের হলুদ ব্যাংকিং, প্রাইম, যমুনা, শাহজালাল ইসলামী, প্রিমিয়ার, এক্সিম, সোস্যাল ইসলামী ও সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেও ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনার সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে শতভাগ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লোভ-লালসা থেকেই ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ হয়—এমন অভিযোগ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বেসিক ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মার্চে তা দাঁড়ায় ৯ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। ওই চার বছর তিন মাসে ব্যাংকটি ৬ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়, যার প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকাই নিয়ম ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

২০১৩ সালের শুরুতেই হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রুপসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে সোনালী ও জনতা ব্যাংক। ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এলসি গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেন বিদেশি ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া, ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে শহিদুল আহসান নামের এক ব্যবসায়ীকে বেসরকারি সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক গুলশান শাখা, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখা ও এক্সিম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় করপোরেট শাখা থেকে ৬৩৪ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত টিম অডিট করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তিনটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে জবাব চেয়েছে। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে জবাব দিলেও বাংলাদেশ ব্যাংক ওই জবাব সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়েছে। জানা গেছে, এ অভিযোগের সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা জাড়িত। বিভাগীয় মামলা হলেও এই ঋণগ্রহীতা ঋণের টাকা ফেরত না দিলে পুরোটাই হাওয়া হয়ে যাবে। টাকা ফেরত পাওয়ার কোনও পথ নেই। এসব টাকা ফেরত পাওয়াও যায় না।

সম্প্রতি কৃষি ব্যাংক থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পদ্মা ফেব্রিকস ও ব্লিচিং ডাইং, মিমটেক্স নিটিং, রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ, কেয়া ইয়ার্ন মিলস, ফেয়ার, ফিয়াজ গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে তাতে। ব্যাংকটির নারায়ণগঞ্জ শাখা থেকেও জেবি ট্রেড, মা এয়ার জেট স্পিনিং, ওশান স্পিনিং, মারহাবা স্পিনিং, স্টার কুটির শিল্প, এঞ্জেল ওয়্যার হাউস, এইচএইচ টেক্সটাইল, অ্যাবা টেক্সটাইল ও নিট পারজোয়ার টেক্সটাইল বিভিন্ন পন্থায় অর্থ বের করে নিয়েছে। এসব অনিয়মের কারণে ২০১৩ সাল শেষে ১ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা প্রভিশন ঘাটতিতেও পড়ে কৃষি ব্যাংক। চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে বিতরণ করা ঋণের ৩৩ দশমিক ২১ শতাংশ। অঙ্কের হিসাবে পরিমাণটা ৫ হাজার ২২ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ব্যাংকটির ৬ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকারকে অনুরোধ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, এত টাকার ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তারা। কিন্তু তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায়।

ব্যাংকিং খাতের এত অনিয়ম আর জালিয়াতির ঘটনা ঘটলেও সরকার যতটা সোচ্চার হওয়ার কথা ছিল তা তারা হয়নি। হওয়া সম্ভবও নয়, কারণ রাজনৈতিক বিবেচনাই অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ অনিয়ম এবং জালিয়াতির মাধ্যমে কার্যত জনগণের অর্থই লুটে-পুটে খাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম কে রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, আর্থিক লেনদেন বা অর্থ জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। ফৌজদারি মামলা হয়। সাজাও হয়। একই সঙ্গে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত চাওয়া হয়। তা না পাওয়া গেলে অপরাধীর সম্পদও বাজেয়াপ্ত হয়। তবে দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে টাকা আদায় হয় না। প্রচলিত আইনে বিচার অনুযায়ী সাজা হয়।

/এসআই/এমএনএইচ/এপিএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেচাকেনা জমজমাট, কম দামে ভালো পাঞ্জাবিতে আগ্রহ ক্রেতাদের
বেচাকেনা জমজমাট, কম দামে ভালো পাঞ্জাবিতে আগ্রহ ক্রেতাদের
‘মাঝেমধ্যে ভাবি, আইপিএল কি আদৌ ক্রিকেট’
‘মাঝেমধ্যে ভাবি, আইপিএল কি আদৌ ক্রিকেট’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়